ঘাসফড়িংয়ের প্রেম

প্রকাশঃ জানুয়ারি ২০, ২০১৫ সময়ঃ ৫:১৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৫৮ অপরাহ্ণ

yudy sauwমানব মনের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রেম অন্যতম। কে কখন কোথায় কার প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে যায় তা কেউ বলতে পারে না। মধ্যযুগে ইউরোপের কিছু অঞ্চলের ডাকিনী বিদ্যায় পারদর্শীরা প্রেমকে মনের বিকার বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, ১৭৫০ সালের দিকে বর্তমান বেলজিয়ামের কিছু স্থানে এমনও দেখা গেছে যে, কারও মনে প্রেমভাব উদয় হলে এবং তা ধরা পরলে তাকে অসুস্থ হিসেবে গণ্য করে বুকের ডান পাশে সীলমোহর দিয়ে দেয়া হতো।

পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তেই প্রেমিক-প্রেমিকার মাঝে একদল মানুষ খলনায়ক হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। যেমনটা আমাদের ঘাসফড়িং প্রেমিক-প্রেমিকার মাঝে অপর এক ঘাসফড়িং  খলনায়ক হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে।

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার আলোকচিত্রী ইয়ুদি সায়ু এমনই এক দুর্দান্ত দৃশ্য ধারণ করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রেমিক ঘাসফড়িং তার প্রেমিকা ফড়িংকে ফুল দিয়ে প্রেম নিবেদন করছে। পাশাপাশি অপর এক দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, অন্য এক ফড়িং এই প্রেমিক-প্রেমিকার মাঝে দেয়াল হয়ে প্রেমিকাকে আলাদা করার চেষ্টা করছে।

যে মানবিক ঘটনা মানবজীবনে সচরাচর দেখা যায়, সেই একই ঘটনা প্রকৃতির খুব ক্ষুদ্র এক জীবের মাঝে দেখতে পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। ৩৪ বছর বয়সী এই ম্যাক্রো আলোকচিত্রী অনেক ধৈর্য ধরে কয়েক ঘণ্টা সময় নিয়ে তার বাড়ির পাশের একটি ঝোপ থেকে এই দৃশ্য ধারণ করেন।yudy sauw-1

আলোকচিত্রীর ধারণ করা দ্বিতীয় দৃশ্যে দেখা যায়, মাঝখানে আসা এক ফড়িং দুইপক্ষের সঙ্গে তাদের ভাষায় ভাব বিনিময় করছে এবং তার অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে, প্রেমিকা ফড়িংটিকে প্রেমিক ফড়িংটির কাছে না যাওয়ার জন্য জোর করছে। আর তৃতীয় ছবিতে মোটামুটি প্রেমিকা ফড়িংটিকে কোনঠাসা করে ফেলেছে ওই খলনায়ক ফড়িং। আলোকচিত্রীর পক্ষে এই ঘটনা পরবর্তীর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি বলেই আমার জানতে পেরেছি। এরপর দ্রুত ফড়িংগুলো আলোকচিত্রীর উপস্থিতি টের পেয়ে জান বাঁচানোর দৌড় দেয়।

প্রকৃতিতে এমন বিরল ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। ইন্টারনেটে এই ছবি প্রকাশের পর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক সংশয়বাদী মানুষ এই ছবিগুলো নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু ইয়ুদির করা ভিডিওটি প্রকাশের পর সংশয়বাদীদের সংশয় বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে। কারণ মানবজাতির আবেগজনিত সম্পর্কের সঙ্গে মানুষ যতটা পরিচিত ঠিক ততটাই অন্য প্রাণীকূলের আবেগ সম্পর্কে মানুষ অজ্ঞ।

জার্মানি এবং রাশিয়ার একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘবছর ধরে প্রাণীকূলের আবেগ অনুভূতি নিয়ে কাজ করছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, মানুষের যেমন আবেগের তাড়না আছে তেমনি অন্যান্য প্রাণীদেরও তা আছে, তবে সেটা এখনও পুরোপুরি আবিস্কার করা যায়নি। কিন্তু কিছু কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে অবশ্য এই বক্তব্য ভিন্ন।

প্রতিক্ষণ/এডি/মায়া

======

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G