খোঁজ মিললো বাঙালি ‘বেয়ার গ্রিলস’ এর
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
বিশ্বের ভয়াবহ দুর্গম সব স্থানে দুঃসাহসী নানা অভিযানে গিয়ে অক্ষত ফিরে আসা প্রায় ‘সর্বভুক’ বেয়ার গ্রিলসকে চেনেন না, তেমন মানুষ বোধ হয় হাতেগোনা। ডিসকভারি চ্যানেলের ভক্ত মাত্রই চেনেন ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ অনুষ্ঠানের একমাত্র আকর্ষণ বেয়ার গ্রিলসকে, যিনি প্রকৃতিকে বশ মানিয়ে ও পরিস্থিতিকে জয় করে কিভাবে বেঁচে থাকতে হয় বা তেমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়, সে ধরনের কৌশলগুলো আমাদের কে দেখান। কিন্তু তার মতো কাঁচা মাছ, সাপ, ব্যাঙ, তেলাপোকা কে উদরে পুরতে সাহস করবে! তাও সেদ্ধ বা রান্না করে নয়, কাঁচাই। বেয়ার গ্রিলস বোধ হয় এবার তার ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ অনুষ্ঠানের সঙ্গী বা সহযাত্রী হিসেবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক বাঙালি তরুণকে খুঁজে পেলেন।
ভারতের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী রাজ কুমার দাস নামের এক তরুণ রীতিমতো সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। তার স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে রয়েছে সেদ্ধ ভাতের সঙ্গে কাঁচা মাছ, শামুক, ব্যাঙ, সাপ, তেলাপোকা ও পোকামাকড়।
রাজ কুমারের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাটে। তার পিতা পেশায় নরসুন্দর। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই পিতার কাজে সাহায্য করেন তিনি। তখন থেকেই প্রচুর টিভি দেখা হয় তার। ‘ম্যান ভার্সাস ওয়াইল্ডে’র দারুণ ভক্ত তিনি। বেয়ার গ্রিলস বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশগুলোতে গিয়ে মাকড়সা, টিকটিকি, সাপ, কীটপতঙ্গ ও এমনকি মৃত জীবজন্তুর দেহাবশেষ খেয়ে জীবনধারণ করেন। এ বিষয়টা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিলো। তিনিও বেয়ার গ্রিলসের মতো হওয়ার মনস্থ করলেন। ব্যস, চালু হয়ে গেলো তার অ্যাডভেঞ্চার। সে অ্যাডভেঞ্চারে কখনও ভাটা তো পড়েইনি, বরং তা দিনে দিনে যেন বেগবানই হচ্ছে।
রাজ কুমার দাস বলছিলেন, আমি এ অনুষ্ঠানটি ৬-৭ বছর ধরে দেখছি, যেখানে এই বেয়ার গ্রিলস ব্যাঙ, সাপ ও এ ধরনের সব জিনিস খান। তাই আমিও একই কাজ করার কথা ভাবলাম। প্রথমদিকে, আমাকে কিছু সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কিন্তু, এখন আমি কাঁচা মাছ, পোকামাকড় ও শামুক খাওয়া উপভোগ করি।
তিনি বলছিলেন, আমি গত ৬-৭ বছর ধরে এগুলো খাচ্ছি এবং কখনও কোন সমস্যায় পড়িনি। শুধু যে বিষয়টা আমার সঙ্গে ঘটছে, তা হলো আমার ক্ষুধা শুধু বাড়ছেই এবং এখন আমি দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ বার খাবার খাই। বাঙালি তরুণ রাজ কুমার দাসের আশা, তিনি একদিন তার এ বিশেষ সামর্থ্য বিশ্বের সবার সামনে প্রদর্শনের সুযোগ পাবেন এবং সচ্ছলভাবে জীবনধারণের পথ খুঁজে পাবেন।
এ তরুণের স্বপ্ন পূরণ হলে, তখন তার পিতাকে নরসুন্দরের কাজটা আর করতে হবে না! তিনি বলছিলেন, আমি আশা করি আমার অনন্য এ সামর্থ্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করুক। আমি আমার সামর্থ্য টেলিভিশনে প্রদর্শন করতে চাই এবং এটা হয়তো আরও ভালোভাবে জীবনধারণের পথ খুলে দেবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির