২৫ হাজার মানুষের জন্য একটি সাঁকো
জেলা প্রতিবেদক
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বরইবুনিয়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহমান বলেশ্বর নদের ওপর ৩০০ ফুট দৈর্ঘের একটি বাঁশের সাঁকো আছে। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চার গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করছেন। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধরা সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
নাজিরপুরের মাটিভাংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ বি এম ফয়সাল আলম রঞ্জু বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ও শিক্ষার্থী নিজেদের প্রয়োজনে এই সাঁকোটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছেন। আমি জনগুরুত্বপূর্ণ এই সাঁকোটির স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার করে দাবি জানিয়ে এসেছি। তবে এখনো কোন ভাল ফলাফল পাইনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বলেশ্বর নদের পূর্ব দিকে নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাংগা ইউনিয়নের বরইবুনিয়া, চর বরইবুনিয়া ও চর মাটিভাংগা গ্রাম। আর পশ্চিম দিকে বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার চর বানিয়ারি ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়া গ্রাম। এই চার গ্রামের মানুষ সাঁকোটি ব্যবহার করে নদী পারাপার হচ্ছেন। সাঁকোর বাঁশ পুরানো হয়ে গেছে। কয়েক জায়গার বাঁশ ভেঙে গেছে।
বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রায়ই বিদ্যালয়গামী শিশুদের নদে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, ২০ বছর আগে বলেশ্বর নদ পারাপারের জন্য গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মহর আলী নামের এক ব্যক্তি নদের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এর আগে মহর আলী খেয়া নৌকায় গ্রামবাসী ও বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের পারাপার করতেন। প্রতিবছর স্থানীয় গ্রামবাসী কাছ থেকে ধান তুলে মহর আলী। গ্রামবাসীর কাছ থেকে তোলা ধান বিক্রি করে ওই টাকায় সাঁকো নির্মাণ ও মেরামত করেন তিনি।
বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় মালাকার বলেন, বরইবুনিয়া গ্রামের দুইটি মাধ্যমিক ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পার্শ্ববর্তী চর ডাকাতিয়া গ্রামের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন বলেশ্বর নদের ওপর তৈরি বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয় যাওয়া আসা করে। এছাড়া বরইবুনিয়া, চর বরইবুনিয়া, চর মাটিভাংগা ও চর ডাকাতিয়া গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রয়োজনে এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন।
চিতলমারি উপজেলার চর ডাকাতিয়া গ্রামের কৃষক অনিমেষ মন্ডল (৪৫) বলেন, আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য পার্শ্ববর্তী শৈলদাহ, মাটিভাংগা ও তারাবুনিয়া বাজারে বিক্রির জন্য বরইবুনিয়া সাঁকো দিয়ে চলাচল করছি। সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমাদের চলাচল করতে কষ্ট হয়।
নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, অর্থ বরাদ্দ পেলে সাঁকোটির স্থলে পাকা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির