রহস্যঘেরা নিখোঁজের ঘটনা (শেষ পর্ব)
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
কিছু কিছু ঘটনা প্রতিদিন ঘটে না। ঘটে না বছর বা এক যুগেও। সেই ঘটনা গুলোর রহস্য কখনও বেড় করাও যায় না। প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন অনেক মানুষ। এসব মানুষের মধ্যে অনেকরই খোঁজ কোনোদিনই কেউ জানতে পারেন না। কিছু কিছু অন্তর্ধান সবার নজর কাড়ে! অনেক প্রশ্ন অনেক গবেষণাও চলে এসব অন্তর্ধান এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তেমনই শীর্ষ দশটি অন্তর্ধানের শেষ পাঁচটির কথা পাঠকদের জন্য থাকছে আজ।
১. গ্লেন মিলার, ১৯৪৪ (বিখ্যাত জ্যাজ সঙ্গীত শিল্পীর অন্তর্ধান)
ডিসেম্বর, ১৯৪৪। ক্রিসমাস এর ১০ দিন আগে এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট উড়োজাহাজে ফ্রান্সে পাড়ি দিচ্ছিলেন গ্লেন মিলার। সেই যাত্রার শেষ কোথায়? জানা যায়নি কোনোদিন। আমেরিকান এই বিখ্যাত জ্যাজ শিল্পীর কোন হদিসও পায়নি কেউ আর। ধারণা করা হয়, জার্মানের বোন বোমারু উড়োজাহাজের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে যায় তার উড়োজাহাজটি। তার ভাগ্যে যাই ঘটুক, গ্লেন মিলারের অন্তর্ধান আমেরিকান সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২. ডি বি কুপার, ১৯৭১
ড্যান কুপার নামে উড়োজাহাজের টিকেট করেছিলেন তিনি। কিন্তু, সংবাদ মাধ্যমগুলোর ভুল বোঝাবুঝির কারণে ইতিহাসে তার নাম হয়ে যায় ডি বি কুপার। উড়োজাহাজ ছিনতাই এর অভিযোগে আজও তাকে খুঁজছে মার্কিন গোয়েন্দারা।
১৯৭১ সালের ২৪শে নভেম্বর। পোর্টল্যান্ড এবং সিয়াটলের মধ্য আকাশে একটি ৭২৭-বোয়িং ছিনতাই করেন ডি বি কুপার। উড়োজাহাজেই দুই লাখ মার্কিন ডলার ছিনতাই করে প্যারাস্যূট দিয়ে লাফিয়ে পড়েন তিনি। তারপর থেকে ডিবি কুপারের হদিস পায়নি কেউ।
৩. পার্সী ফশেট, ১৯২৫
ব্রাজিলের জঙ্গলে ‘লুকানো স্বর্ণের শহর’ খুঁজতে ১৯২৫ সালে সদলবলে বের হন ব্রিটিশ কর্ণেল পার্সী ফশেট। সাথে ছিলেন তার বড় ছেলে জ্যাক এবং বন্ধু র্যা৯লে রিমেল। তারপরই উধাও হয়ে যান তিনজন। তাদের খুঁজতে গভীর জঙ্গলে অনেক দল গেছে। সেসব অভিযানেও বিভিন্ন সময়ে শতাধিক মানুষও মারা যায়। ব্রাজিলের জঙ্গল থেকে পার্সী ফশেট এর ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার হলেও কোন খোঁজ মেলেনি পার্সী ফশেট আর দুই সঙ্গীর।
৪. জিমি হোফা, ১৯৭৫
জিমি হোফা ছিলেন আমেরিকান ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং লেখক। আন্তর্জাতিক ব্রাদারহুড টিমস্টার এর সাথে ১৯৩২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা ছিলো প্রায় ১৫ লাখ। ১৯৭৫ সালের ৩শে জুলাই ব্লুমফিল্ড টাউনশিপ এর একটি রেস্টুরেন্টর সামনে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজ হবার সাত বছর পর ১৯৮২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার অন্তর্ধানের রহস্য আজও বের করা সম্ভব হয়নি।
৫. এমিলিয়া ইয়ারহার্ট, ১৯৩৭
প্রথম নারী পাইলট হিসেবে আমেরিকার সম্মানজনক ফ্লাইং ক্রস লাভ করেছিলেন এমিলিয়া ইয়ারহার্ট। ১৯৩৭ সালে যখন তিনি নিখোঁজ হন তখন তার বয়স ৩৯ বছর। আকাশপথে নিউ গিনি হয়ে হাউল্যান্ড দ্বীপে যাবার পথেই নিখোঁজ হন এমিলিয়া। কারো সন্দেহ জাপানী সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন তিনি। কেউবা মনে করেন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন।
কিন্তু, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের সন্ধানও মেলেনি আজও। ১৯৭০ সালের শেষ অব্দি পর্যন্ত কিছু সন্দেহবাদীর ধারণা ছিলো নাম পরিচয় পাল্টে আমেরিকার কোথাও হয়তো বসবাস করছেন এই পাইলট।
তথ্যসূত্র:
১. জেফ ডেনেলেক, কলোরাডোর লেখক
২. অন্তর্জাল
রহস্যঘেরা নিখোঁজের ঘটনা (প্রথম পর্ব)
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে