‘মা’ প্রতিটি দিনই তোমার

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১২, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৫৯ অপরাহ্ণ

maa-ownload2যদি প্রশ্ন হয় কোন শব্দে সবচেয়ে বেশি আকুলতা, বেশি আবেগ, নিবিড় টান আছে—বিতর্ক ছাড়াই একটি উত্তরই আসবে পৃথিবীজুড়ে ‘মা’। মায়ের সঙ্গে সন্তানের গভীরতম সম্পর্কের কাছে সব সম্পর্কই যেন গৌণ। যে সম্পর্কের সঙ্গে আর কোনো তুলনা হয় না। একটি আশ্রয়ের নাম ‘মা’। একটি শব্দই মনে করিয়ে দেয় অকৃত্রিম স্নেহ, মমতা আর গভীর ভালোবাসার কথা। মা চিরন্তন। শুধু বিশেষ দিন নয়; মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রতিটি দিনের। প্রতিটি মুহূর্তের। আজ বিশ্ব মা দিবস। মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় ‘মা দিবস’। প্রশ্ন জাগতে পারে, মা-তো প্রতিদিনের, প্রতিক্ষণের। তাহলে ‘মা’ নিয়ে আবার বিশেষ দিন কেন? কিন্তু ক্ষতি কী, যদি একটি বিশেষ দিনে মায়ের দিকে আরেকবার প্রাণভরে তাকাই, যারা দূরে থাকি তারা আরেকবার মাকে বিশেষভাবে স্মরণ করি। মাকে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য না হলেও মাকে সম্মানদেখাতে, স্মরণ করতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মা দিবসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

বিশ্বের নানা প্রান্তে আজ পালিত হবে মা দিবস। হয়তো মায়ের হাতে মা দিবসের কার্ড দিয়ে কিংবা মায়ের প্রিয় রঙের শাড়িটি তুলে দিয়ে। অথবা মাকে চমকে দিয়ে তাঁরপ্রিয় খাবারটি নিজের হাতে রান্না করে। অপরিশোধ্য মাতৃঋণের বদলে মাকে ক্ষণিকের আনন্দ দিয়ে খুশি হবে সন্তানেরা। দূরে থাকা মায়ের ছোঁয়া যাঁরা পাবেন না, তাঁরা দ্বারস্থ হবেন মুঠোফোনের। আর মাতৃহারা সন্তান বুকের সবকষ্ট চেপে মনে মনে বলে উঠবে, ‘আমি খুঁজেছি তোমায় মাগো’।

‘মা যে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধরিয়া, করেছেন আমাদের ঋণি, গায়ের চামড়া কাটিয়া দিলেও, সেই ঋণ সুদ হবেনা জানি’। ‘মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম’। ‘এমন একটা মা দেনা’। ‘মাগো মা, ওগো মা, আমারে বানাইলি তুই দিওয়ানা’। এমন অসংখ্য গান, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস আর নাটক যাকে নিয়ে লেখা হয়েছে তার নাম ‘মা’।

‘মা’ শব্দটি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এবং মধুর। মা মানেই আবেগ আর ভালোবাসায় ভরপুর একটি নাম। ছোট্ট শিশুটি পৃথিবীতে প্রথম যে শব্দটি বলতে শেখে তার নাম মা। মায়ের চেয়ে মধুর ডাক পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। মা উচ্চারণের সাথে সাথে হৃদয়ে যে আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তাতে অনাবিল প্রশান্তি নেমে আসে। মা পাশে বসে মাথায় হাত বুলালে মনে হয় পৃথিবীর সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। মায়ের সাথে আর কারো তুলানা করা যায় না। মায়ের তুলনা শুধুই মা। কবির ভাষায়, ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেন ভাই, ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’

তবে মৃত্যুর পর তার মেয়ে আনা জার্ভিস মায়ের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের কাজে হাত দেন। তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন একটি বিশেষ দিন ঠিক করে ‘মা দিবস’ টি উদযাপন করার জন্য। আর সে লক্ষ্যেই ১৯০৮ সালের ১০ মে তিনি পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রাফিটন শহরের সেই চার্চে, যেখানে তার মা অ্যান জার্ভিস রোববার পড়াতেন সেখানে প্রথমবারের মতো দিনটি উদযাপন করেন। এরপর থেকেই সময়ের সঙ্গে এটি বিস্তার হতে থাকে চারপাশে এবং এক সময় ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।

তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেওয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা। এদিকে মা দিবসকে কেন্দ্র করে ফেইসবুকে নানা রকম স্ট্যটাস দিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। অনেকে অনেকভাবে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করছেন। তবে যাদের মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তাদের অনুভূতি ছিল অনেকটা হৃদয়বিদারক।

আবার যাদের মা আছেন, কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে দূরে থাকেন তাদের অনুভূতি যেন আরও কষ্টের। তবে আবার অনেকের অনুভূতিই ছিল আনন্দপূর্ণ। অনেককে দেখা গেছে মায়ের সাথে তোলা ছবি পোস্ট করতে। আর বন্ধুদের আপলোড করা ছবিতে লাইক আর কমেন্টও ছিল যথেষ্ট পরিমাণে।

প্রত্যেকটি ধর্মেই মাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আর ইসলাম ধর্মে মায়ের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলা হয়েছে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।

এ বিষয়ে একটি ঘটনা খুব উল্লেখযোগ্য। এক ব্যক্তি হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর নিকট এসে জানতে চাইল কে তার কাছে বেশি সেবা পাবার হকদার। রাসূল (সা:) বললেন তার মা। লোকটি একই প্রশ্ন তিনবার করলো। আর রাসূল (সা:) তিনবারই বললেন তার মায়ের কথা। তবে চতুর্থবার একই প্রশ্ন করলে রাসূল (সা:) তার বাবার কথা বললেন।

কিন্তু দুংখের বিষয় হচ্ছে আমাদের আধুনিক সমাজে অনেকেই তার মা-বাবাকে নিজেদের সাথে রাখতে চান না। আর এ জন্য তৈরি হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। তবে ধর্মীয়, সামাজিক এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবারই উচিত তার বাবা-মার প্রতি যত্ন নেওয়া। কেননা প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী সবাইকেই একদিন বৃদ্ধাবস্থার সম্মুখীন হতে হবে।

উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রচলিত মা দিবসের সূচনা হয় ১৯০৮ সালে।বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক স্কুল শিক্ষিকা অ্যানা জারভিস সেখানকার পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা দেখে মর্মাহত হয়ে মায়ের জন্য বিশেষ দিন পালনের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করার কথা ভাবলেন। তাঁর সে ভাবনা বাস্তবায়নের আগে ১৯০৫ সালের ৯ মে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর মেয়ে অ্যানা এম জারভিস মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেন।বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে ১৯০৮ সালে তাঁর মা ফিলাডেলফিয়ার যে গির্জায় উপাসনা করতেন, সেখানে সব মাকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মা দিবসের সূচনা করেন।১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মায়েদের জন্য উৎসর্গ করে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়। আজ সেই দিন।

‘মা যে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধরিয়া, করেছেন আমাদের ঋণি, গায়ের চামড়া কাটিয়া দিলেও, সেই ঋণ সুদ হবেনা জানি’। ‘মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম’। ‘এমন একটা মা দেনা’। ‘মাগো মা, ওগো মা, আমারে বানাইলি তুই দিওয়ানা’। এমন অসংখ্য গান, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস আর নাটক যাকে নিয়ে লেখা হয়েছে তার নাম ‘মা’।

‘মা’ শব্দটি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এবং মধুর। মা মানেই আবেগ আর ভালোবাসায় ভরপুর একটি নাম। ছোট্ট শিশুটি পৃথিবীতে প্রথম যে শব্দটি বলতে শেখে তার নাম মা। মায়ের চেয়ে মধুর ডাক পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। মা উচ্চারণের সাথে সাথে হৃদয়ে যে আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তাতে অনাবিল প্রশান্তি নেমে আসে। মা পাশে বসে মাথায় হাত বুলালে মনে হয় পৃথিবীর সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। মায়ের সাথে আর কারো তুলানা করা যায় না। মায়ের তুলনা শুধুই মা। কবির ভাষায়, ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেন ভাই, ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’

তবে মৃত্যুর পর তার মেয়ে আনা জার্ভিস মায়ের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের কাজে হাত দেন। তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন একটি বিশেষ দিন ঠিক করে ‘মা দিবস’ টি উদযাপন করার জন্য। আর সে লক্ষ্যেই ১৯০৮ সালের ১০ মে তিনি পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রাফিটন শহরের সেই চার্চে, যেখানে তার মা অ্যান জার্ভিস রোববার পড়াতেন সেখানে প্রথমবারের মতো দিনটি উদযাপন করেন। এরপর থেকেই সময়ের সঙ্গে এটি বিস্তার হতে থাকে চারপাশে এবং এক সময় ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।

তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেওয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা।

এদিকে মা দিবসকে কেন্দ্র করে ফেইসবুকে নানা রকম স্ট্যটাস দিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। অনেকে অনেকভাবে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করছেন। তবে যাদের মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তাদের অনুভূতি ছিল অনেকটা হৃদয়বিদারক।

আবার যাদের মা আছেন, কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে দূরে থাকেন তাদের অনুভূতি যেন আরও কষ্টের।

তবে আবার অনেকের অনুভূতিই ছিল আনন্দপূর্ণ। অনেককে দেখা গেছে মায়ের সাথে তোলা ছবি পোস্ট করতে। আর বন্ধুদের আপলোড করা ছবিতে লাইক আর কমেন্টও ছিল যথেষ্ট পরিমাণে।

প্রত্যেকটি ধর্মেই মাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আর ইসলাম ধর্মে মায়ের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলা হয়েছে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।

এ বিষয়ে একটি ঘটনা খুব উল্লেখযোগ্য। এক ব্যক্তি হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর নিকট এসে জানতে চাইল কে তার কাছে বেশি সেবা পাবার হকদার। রাসূল (সা:) বললেন তার মা। লোকটি একই প্রশ্ন তিনবার করলো। আর রাসূল (সা:) তিনবারই বললেন তার মায়ের কথা। তবে চতুর্থবার একই প্রশ্ন করলে রাসূল (সা:) তার বাবার কথা বললেন।

কিন্তু দুংখের বিষয় হচ্ছে আমাদের আধুনিক সমাজে অনেকেই তার মা-বাবাকে নিজেদের সাথে রাখতে চান না। আর এ জন্য তৈরি হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। তবে ধর্মীয়, সামাজিক এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবারই উচিত তার বাবা-মার প্রতি যত্ন নেওয়া। কেননা প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী সবাইকেই একদিন বৃদ্ধাবস্থার সম্মুখীন হতে হবে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G