দানবাকৃতির “ক্যাটফিশ”
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
মনে পড়ে বুড়ো জেলে সান্তিয়াগোর কথা। ঐ যে হেমিংওয়ের ‘ওল্ড ম্যান এন্ড সি’র বুড়ো জেলে সান্তিয়াগো। যে কিনা তার শিকার করা দানব মাছটিকে তীর পর্যন্ত আনতে পারেনি। তীরে আনার আগেই হাঙ্গরে খেয়ে নিয়েছিলো প্রায় পুরো মাছ। এত দূরে না যেয়ে আমরা নিজ দেশের সেলিনা হোসেনের ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’তে জেলে মালেকের দিকে তাকালেইতো পারি। যে মালেক দরিয়ায় বড় মাছ ধরতে গিয়ে নিজের পা’টাই হারিয়ে ফেললো হাঙ্গরের কামড়ে।
কিন্তু ইটালির জেলে দিনো ফেরারি’র বেলায় এরকম কিছু ঘটেনি। তবে তেমন কিছু না ঘটলেও তিনি বেশ চমকে গিয়েছিলেন। আর তাকে ভীষন করে চমকে দিয়েছে ৮.৮ ফুট আর ২৮০ পাউন্ড (১২৭ কেজি) ওজনের একটি ক্যাটফিশ। জ্বি, ‘ক্যাটফিশ’, বাংলায় যাকে আমরা ‘মাগুর’ মাছ নামে জানি।
ঢাউশ আকার আর বিরাট ওজনের মাছটি ফেরারি’র বড়শিতে টোপ খেয়ে আটকে যায়। ফেরারি’র তখনও কল্পনাতেই ছিলোনা যে মাগুর মাছটি এতটা বিশাল হবে। কিন্তু যতই তিনি ছিপ গুটিয়ে আনছিলেন আর মাছটি ততই তড়পাচ্ছিলো। আর ফেরারি এই তড়পানি অনুভব করছিলেন বলেই বুঝতে পেরেছিলেন আজকের দিনটিতে তার জীবনে বিশেষ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তিনি আজ বিশেষ কিছু অর্জন করতে যাচ্ছেন।
৪০ মিনিটের লড়াই শেষে দুই ভাই দিনো ফেরারি এবং দারিয়ো ফেরারি মাছটিকে তীরে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। পো ডেল্টা নদীতে সাড়ে ৬ ফুট লম্বা মাগুর মাছ সহজেই মেলে। ‘বেলুগা স্টার্জিয়ন’ মাছের পর এই মাগুর মাছই এ অঞ্চলের মিঠা পানির মাছের মধ্যে সবচেয়ে বড় আকারের হয়। ব্রিটিশ পত্রিকা ইউকে মিররের প্রতিবেদন বলছে, দিনো ফেরারির বড়শিতে ধরাপড়া মাগুর মাছটি এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ মাগুর মাছের তালিকায় রয়েছে।
সাধারণত দেখা যায় এ ধরণের মাগুর মাছের ভয়ংকর রকমের ক্ষুধা এবং আক্রমনের নজির রয়েছে। আর এ ধরনের নজির থাকলেও কোন বিপদ ছাড়াই দুই ভাই মাছটিকে তীরে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। অন্তত বুড়ো সান্তিয়াগোর মত অবস্থাতো দিনো ফেরারির হয়নি। অথবা মালেকের মত পা হারাতে হয়নি মাগুরটার আক্রমনে। এই বা কম কি?
আর তাই ভেবেই হয়তো দিনো ফেরারি তার শিকার করা মাছটির সাথে ছবি তুলে আবার সেটিকে ছেড়ে দিয়েছেন পো ডেল্টার জলরাশিতে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ