শারীরিক সুস্থতায় মানসিক চাপ কমান
ফারজানা ওয়াহিদ
আমরা মানসিক ভাবে সুস্থ থাকলেই শারীরিক ভাবেও সুস্থ থাকব। মানসিক চাপ বর্তমানে খুব সাধারণ একটি বিষয়। বর্তমান জীবনে আমরা সার্বক্ষণিক একটা প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকি। সব কিছুতেই একটা প্রথম হওয়ার মনোভাব থাকে। মানসিক চাপ কেবল আমাদের ব্যক্তিত্বের উপর ছাপই ফেলে না শরীরের উপরও প্রভাব ফেলে।
বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানসিক সমস্যা খুব খারাপ একটা বিষয়। যা আমাদের মস্তিস্ককের সকল নার্ভ দূর্বল করে ফেলে। যারা মানসিক চাপে থাকেন সব সময়, তাদের অতি দ্রুত মানসিক চাপ কমানোর ব্যবস্তা নিতে হবে। না হলে এর থেকে আরও ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন।
মানসিক চাপ কমানোর কিছু সহজ উপায়-
১। ঢাকা শহরের হাজারো অশান্তির মধ্যে একটি শান্তির জায়গা হচ্ছে খোলামেলা অথবা হালকা জ্যাম এর রাস্তাতে রিকশা ভ্রমন, বেশি জ্যাম হলেও যে খুব একটা খারাপ লাগে তা না। তাই সারাদিনের কর্মব্যাস্ততার পরে একটু রিকশা দিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ৫০ টাকা দূরত্বের যে কোন জায়গাতে রিকশাতে করে যাওয়া, এককাপ চা অথবা অন্য কিছু খাওয়া, এবং ফিরে আসা, সব মিলিয়ে ১-২ ঘন্টার একটা রিফ্রেসমেন্ট হয়ে যাবে।
২। বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল। রিফ্রেসমেন্টের জন্য সবচাইতে ভাল উপায় হচ্ছে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, আড্ডা দেয়ার সময় ভুলে যেতে হবে কোন ক্লায়েন্ট কি মেইল করেছে, কার কাজের কি অবস্থা। আড্ডা বাজির সময় এইগুলা নিয়ে ভাবা ভয়াহব অপরাধ। আড্ডা দেয়ার সময় ভাবতে হয় কিভাবে বন্ধুদের সাথে খোঁচাখুঁচিতে করা যায়। কিভাবে সবার খাবারের বিল একজনের উপর চাপিয়ে দেয়া যায়। এই একটা সম্পর্ক যেটা কখনই বয়সের সাথে পরিবর্তন হয় না। তাই কর্ম ক্ষেত্রের বাইরে একটা ভাল বন্ধু সার্কেল মেইন্টেইন করতে পারলে অনেক বেশি কর্ম স্পৃহা অর্জন করা যায়।
৩। আমরা যারা অফিস আওয়ার এর পর আবার রাত জেগে কাজ করি অথবা আমাদের মধ্যে যাদের কোন অফিস আওয়ার নেই তাদের জন্য ঘুম একটা গুরুত্বপূর্ন হাতিয়ার। একটা নির্দিষ্ট পরিমান কাজ করার পর ব্রেইন ততটা প্রোডাক্টিভ থাকেনা যতটা কাজের শুরুতে ছিল। তাই একটা হালকা ঘুম আবার নতুন ভাবে কাজ শুরু করতে সাহায্য করে থাকে।
৪। আপনার সফলতা অনেকটাই নির্ভর করবে আপনি পারিবারিক ভাবে কতটুকু সুখি তার উপর। তাই পরিবারের সাথে সময় কাটানোটা শুধু রিফ্রেসমেন্টের জন্য নয়, এমনিতেও অনেক গুরুত্বপূর্ন। তবে আমরা যারা কম্পিউটার জগতের মানুষ তারা সুযোগ পেলেই কম্পিউটার নিয়ে বসে যাই। তাই পুরোপুরি রিফ্রেসমেন্টের জন্য যদি কম্পিউটার থেকে দূরে গিয়ে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারি তাহলে সব চাইতে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে কেননা এটা আপনাকে কাজ থেকে সম্পূর্নরুপে দূরে থাকতে সহায়তা করবে।
৫। সবচাইতে ভাল রিফ্রেসমেন্টের জন্য ব্যায়াম এবং খেলাধুলাকে আমরা বেছে নিতে পারি। কারন এই দুইটা জায়গাতেই আপনি কাজ নিয়ে ভাবার সময় পাবেননা। এছাড়াও সারাদিন বসে বসে কাজ করার ক্ষতি কিছুটা হলেও পুসিয়ে নেয়া যাবে। কেননা স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
৬। বন্ধুমহলে অথবা পরিচিত অন্য মহল গুলোতে মুভি দেখাটা রফ্রেসমেন্ট হিসেবে কাজ করে। আবার চোখ বন্ধ করে, হালকা আলোতে শুয়ে শুয়ে বা বসে বসে ঠান্ডা ধাচের গান শুনাটা রিফ্রেসমেন্টের জন্য ভাল ভূমিকা পালন করে।
৭। কন্সেন্ট্রেট গ্রো করার জন্য ম্যাডিটেশন খুবই গুরুত্বপুর্ন। তাই ম্যাডিটেশন আপনার একটি ভাল হাতিয়ার হতে পারে রিফ্রেসমেন্টের জন্য।
৮। অনেকের অনেক রকমের শখ রয়েছে তা নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। যেমন পাখি পালা, গাছের পরিচর্যা, ঘর গুছানো এই কাজ গুলা আপনাকে আপনার ওয়ার্ক স্ট্রেস থেকে দূরে রাখবে। আপনার যদি রান্না বান্নার শখ থেকে থাকে। তাহলে ভাল ভাল খাবার রান্না করে পরিবারের সকলকে উপহার দিতে পারেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফজে