দূষিত পানি আজও বহু মা ও নবজাতকের ঘাতক
সিফাত তন্ময়
বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ঘাটতি আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে বহু মা ও নবজাতক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, মৌলিক এই সুবিধাগুলোর ঘাটতির কারণে নবজাতকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন উদ্ভাবনগুলো কাজে আসছে না। সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী প্লস ওয়ান-এ প্রকাশিত বিশেষজ্ঞদের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এই তথ্য ।
দাতব্য সংস্থা ওয়াটারএইড, লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্য স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর বিশেষজ্ঞরা সমন্বিত ভাবে তৈরি করেন এই প্রতিবেদনটি ।
তাদের মতে, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হলেও পরিষ্কার পানি, স্বাস্থ্যবিধি ও পয়ঃনিষ্কাশনের বিষয়গুলোতে এখনো খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। টয়লেট বা বর্জ্য অপসারণের বিষয়টি বহু ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়। মৌলিক সুবিধাগুলোর অভাবে অনেক সময় নবজাতকের স্বাস্থ্য রক্ষার নতুন উদ্ভাবনগুলোও ব্যর্থ হয়ে যায়।
সাময়িকীতে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়,
তানজানিয়ার এক-তৃতীয়াংশের কম শিশু পরিষ্কার পানি এবং অন্য সুবিধা পেয়ে জন্ম নেয়।
২০১৩ সালেও প্রতি ৪৪ নারীর মধ্যে একজন শিশু জন্ম দেওয়ার সময় মারা যান।
প্রতিবছর মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা আট হাজার।
শুধু তানজানিয়াই নয়, পৃথিবীর বহু দেশে আজও একই পরিস্থিতি বিরাজমান।
ওয়াটারএইডের ইয়েল ভেলেমান বলেন,
” ভিক্টোরিয়ার আমল থেকেই আমরা জানি, শিশুর জন্মের সময় পরিষ্কার পানি এবং স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তার পরও আজও হাজার হাজার মা শিশুর জন্মের সময় ডাক্তার বা দাইয়ের সহায়তা পেলেও পরিষ্কার পানি পান না। একটি শিশুর জীবনকে পৃথিবীতে আনার অর্থ এই নয় যে, মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে হবে। কাজেই সরকারগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কাজ করতে হলে প্রথমে এই মৌলিক বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।”
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসাব মতে,
৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশের ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই পরিষ্কার পানির নির্ভরযোগ্য সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। বিষয়গুলো নিয়ে সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।