মানুষ নয় প্রকৃতির ঘর

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ১১, ২০১৫ সময়ঃ ৬:২৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৪০ অপরাহ্ণ

 মানুষ বিচিত্র ও সুন্দর্য দুটির সংমিশ্রণ একসাথে চায়। কিন্তু সব সময় কি আর তা খুজে পাওয়া যায়।যেখানে বৈচিত্র থাকে সেখানে সুন্দর্য থাকে না আর যেখানে সুন্দর্য থাকে সেখানে বৈচিত্র থাকে

না। তবে এমন একটি গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানে দুইয়ের সংমিশ্রণই মেলে। তবে একটি বিষয়ে অবাক না হয়ে পারবেন না যে এ গ্রামে কোনও মানুষ বাস করে না।

Green-House-চিনের জেজিয়াং প্রদেশের সেংগসান নামের এমন একটি দ্বীপ আছে যার
প্রায় ৪০-৫০ বছর আগে গ্রামটির সব মানুষ ধীরে ধীরে ওই স্থান ছেড়ে চলে যায়। সেখানে জীবিকা নির্বাহ করা দুস্কর হয়ে পরলে চার বছরের মধ্যে গ্রামের দুই হাজারেরও বেশি মানুষ চীনের একটি শহরে আশ্রয় নেয়। তার পর পরিত্যক্ত গ্রামটিকে প্রকৃতি তার মায়ায় জরিয়ে নেয়।

পাহাড়ে ঘেরা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের সেই পরিত্যক্ত গ্রামের নাম হাউটুয়া ওন।

চারপাশে পাহাড় আবৃত গ্রামটি পাহাড় কেটেই তৈরি করা হয়েছিলো। কিছু কিছু ঘরবাড়ি পাহাড় কেটে ছেটেই তৈরি করা হয়। এ ছাড়া পাহাড়ি এই গ্রামে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যাতায়াতের জন্য সুন্দর করে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়েছিলো। এখনো রয়েছে সেসব রাস্তা।

মাত্র কয়েকবছর আগে কয়েকজন পর্যটক বেড়াতে গিয়ে আবিষ্কার করে গ্রামটিকে। তাদের তোলা ছবি ও গ্রামের বর্ণনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেন। এরপর এর সৌন্দর্যের সুধা পান করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে অগণিত মানুষ।

Green-House

গ্রামটি শহর থেকে অনেক দূরে। এক সময় এখানে দুই হাজার জেলে পরিবারের বাস ছিলো। তবে একেবারে সবাই যায়নি। দুয়েকজন ঠিকই মায়ার টানে রয়ে যায়। তাদেরই একজন সান আয়ো। ইয়াংটিজ নদীর পাশের এই সুন্দর গ্রামটি ছেড়ে কেনো সবাই হঠাৎ চলে গেলো। সে কথা জানা গেলো তার কাছেই।

তিনি জানান, তাদের গ্রামটি শহর থেকে অনেক দূরে। তাই শহরের সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এজন্য শহুরে জীবনের তাগিদে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধার কারণে সবাই গ্রাম ছেড়ে শহড়ে পাড়ি জমায়।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে-মেয়েরাও একে একে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তবে মায়ার টানে আমি রয়ে গেছি। আমার মতো আরো কয়েকজন রয়ে গেছেন। আমার চোখের সামনে এই গ্রাম যখন জনশূন্য হয়ে যায়, আর ধীরে ধীরে সবুজ লতা আমার প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘর দখল করে নেয়- তখন খুবই কষ্ট পেয়েছি। তবে এখন আর তেমন কষ্ট হয় না। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের গ্রামটি দেখতে অনেক মানুষ আসে।’

এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়াল লতাপাতায় জড়িয়ে এক নান্দনিক সবুজের সমারোহের সৃষ্টি হয়েছে। এটা যেকোনো ব্যক্তিকে সবসময় কাছে টানে। গ্রামে যেসব পর্যটক আসেন তাদেরকে গ্রাম ঘুরিয়ে দেখান সান আয়ো। এ কাজে তিনি খুব মজা পান বলে জানান।

 

প্রতিক্ষণ /এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G