প্রজাপতির বাগান
ছোটবেলায় দাদী-নানীর কোলে বসে রূপকথার গল্প শুনতে কার না ভালো লাগতো ! আর ভালো লাগবে নাইবা কেন? সেই গল্পের ঝুড়িতে যে সাজানো থাকতো রং-বেরং এর কত কথা। কোথাও বা রূপার গাছে সোনার আপেল ধরে। কখনো রাজকন্যা বন্দি থাকে সমুদ্রের তলে। মনে আছে সেই গল্পগুলো? শুরুতেই থাকতো বিশাল রাজ প্রাসাদ আর ফুলের বাগান। যেখানে রাজকন্যা বিকেলবেলা সখীদের সাথে খেলা করতো। তখন ভাবতেও ভালো লাগত, ‘যদি এমন একটি বাগানের সন্ধান পেতাম’!
কোন একজন মনীষী বলেছিলেন, ‘তুমি যা কিছু কল্পনা করতে পারো তাই বাস্তব’। সত্যি বলতে সেই রুপকথার বাগানটি এখন বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি ।
আরবের উত্তপ্ত মরুভূমিতে একটি প্রাণীর সাধারণ জীবন-যাপনে যেখানে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ৫০ ডিগ্রির অধিক তাপমাত্রা উপেক্ষা করে বিনোদনের জন্যে গড়ে তোলা হয়েছে প্রজাপতির কৃত্রিম বাগান। আরব আমিরাতের পর্যটন নগরী দুবাইয়ে নির্মিত এ বাগানে শোভা পাচ্ছে নানান প্রজাতির প্রজাপতি। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকরা একবার হলেও ঢু মারেন দুবাই বাটারফ্লাই গার্ডেনে। বাগানটি সাজানো হয়েছে সুপরিকল্পিত শ্রেণি বিন্যাসে। আমিরাতের শাসক থেকে শুরু করে অনেকের ছবি বানানো হয়েছে প্রতীকী প্রজাপতি দিয়ে।
এই বাগানের প্রবেশ পথে দর্শনার্থীদের আগাম শুভেচ্ছা জানাবে ফুল দিয়ে সাজানো প্রজাপতিরা। নাম না জানা অসংখ্য প্রজাতির প্রজাপতির সম্মেলন এখানে। কৃত্রিম হলেও প্রকৃতি সৌন্দর্যে ভরা বাগান দেখে মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি যারা বাগানে কাজ করেন তারা যেন স্বর্গেই থাকেন।
বাটারফ্লাই গার্ডেনে শ্রমিকরা এমনটিই বলেছেন, ‘এটি কোনো কাজ নয়, বরং স্বর্গবাসের মত মনে হয়’।
দুবাই বাটারফ্লাই গার্ডেনের এমডি প্রকৌশলী আবদেল নাছের ইয়াছিন রেহাল জানান, ‘বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে বিলুপ্ত হতে চলছে নানা প্রজাতির প্রাণী। বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীগুলো সংরক্ষণ করে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। সেজন্যে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা প্রায় দুর্লভ প্রজাতির সব প্রজাপতি রাখা হয়েছে এখানে । প্রাথমিকভাবে শখের বশে শুরু করলেও এখন বাণিজ্যিক রূপ পেয়েছে বাটারফ্লাই গার্ডেন’।
বাটারফ্লাই গার্ডেন তৈরি করা হয়েছে দুবাইল্যান্ডের দক্ষিণ আল বারষা এলাকায়। পর্যটনের জন্যে বিখ্যাত মিরাক্কেল গার্ডেনের পাশেই এর অবস্থান। দুবাইয়ের কৃত্রিম এ প্রজাপতির বাগান খোলা থাকে সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। আর পুরোটা সময় জুরেই দেখা যায় নানান রং এর খেলা । ঠিক মনে হবে রূপকথার সেই রাজকন্যার বাগান।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেবিএম