ভালবাসাহীন লজ্জার দেয়াল

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ১:১৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:২৪ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

wall

যুগে যুগে কিছু মানুষের জন্ম হয়েছে আজন্ম প্রতিবাদী হয়ে। সত্য-মিথ্যা, ধনী-গরিবের চিরন্তন অসম যে ব্যবধান; তা কমিয়ে এক সমতা বিধান করাই তাঁদের কাজ। অসম এই সমাজের মধ্যে আজও কতশত মানবতাবাদীর জন্ম হচ্ছে; সমাজে সমতা ফিরিয়ে আনার জন্য। ভালোবাসার বিচার সাদা-কালো, ধনী-গরিব দিয়ে হয় না। আর ভালোবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার নিজস্ব বস্তুগত কোনো সম্পত্তি নয়। এ এমন এক শব্দ, যা শুধু মানুষে মানুষে নয় জীবাত্মার সাথে পরমাত্মারও সম্পর্কের সেতু গড়ে তুলে। কিন্তু আজও আমাদের এই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষরস্রোতা নদীর মতো প্রবলবেগে চরম অমানবিকভাবে বয়ে চলেছে ধনী-গরিবের এক অসম দেয়াল। 

কিছু আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আর কিছু আমরা চাইলেও এড়িয়ে চলতে পারি না। ধনী-গরিবের অদৃশ্য সীমানা প্রাচীর চোখে দেখা যায় না কিন্তু প্রতি মুহূর্তে অনুভব করা যায়। তবে এমনও নজির আছে, যেখানে প্রত্যক্ষ করা যায় এই চিরন্তন অসমতা। সেই কালিমাচিহ্ন এঁকে দিলো দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর বিত্তশালীরা।

shame

তারাই তৈরি করলেন, ১০ ফুট উঁচু ইট-সিমেন্টের দেয়াল। এর ওপর আবার রয়েছে কাঁটাতারের বেড়াজাল। এক পাশে বসবাস গরীব মানুষদের, অন্যপাশে ধনীদের। গরীব লোকজন যাতে ধনীদের এলাকায় যেতে না পারে সেজন্য এই দেয়াল। ‘যেতে না পারে’- কথাটির মানে বুঝতে পেরেছেন? বিত্তশালীদের কোনোকিছু যাতে গরীবরা চুরি করতে না পারে, সেজন্যই নির্মাণ করা হয় এই দেয়াল! এই দেয়ালকে পেরুর ‘বার্লিন দেয়াল’ বলা হয়। কিন্তু এখন এটিকে বলা হয় ‘লজ্জার দেয়াল’।

রাজধানী পেরুর কাছাকাছি এই দেয়ালটির একপাশে অর্থাৎ সারকোতে গরিব মানুষদের বসবাস, অন্যদিকে সান হুয়ান ডি মিরাফ্লোরসে বিত্তশালীদের আবাস। রাত যখন গভীর হতে থাকে, তখন ভাঙা ছাদের কাঠের ঘরগুলোতে মোমের আলো জ্বলে উঠে। আর অন্যপাশে উঁচু ভবনগুলোতে চলতে থাকে বৈদ্যুতিক আলোর মেলা।

walll

মানবাধিকারকর্মীরা দেয়ালটিকে লজ্জার দেয়াল বলে অভিহিত করছে। সম্প্রতি একাধিক মানবাধিকার সংগঠন সেখানকার দরিদ্র শিশুদের একত্রিত করে। শিশুরা ঐ দেয়ালে মনের মাধুরী মিশিয়ে এঁকে যাচ্ছে তাদের কল্পনার বিভিন্ন চিত্রপট।

আর লজ্জার দেয়ালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীরা দেয়ালে লিখেছেন, ‘ আমার দেশ তোমার, আমার দেশ আমার, আমার দেশ সবার।’

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G