সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত চুয়াডাঙ্গাবাসী
অনিক চক্রবর্তী (চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি)
১৯৭০ সালে যাত্রা শুরু করে ৫০ শয্যা বিশিষ্টি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটি। প্রায় ১৮ লক্ষ মানুষের বসবাস এই চুয়াডাঙ্গা জেলার চিকিৎসা সেবার কথা চিন্তা করে সরকার ২০০৩ সালে তা ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করেন। কিন্তু সেই ‘উন্নীত’ শুধু কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।
১০০ শয্যায় উন্নতি করা হলেও সেই ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চালানো হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। রোগী সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্স। প্রায় ১৮ লক্ষ জনগনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ৫০ শয্যার জনবল। এতে একদিকে চিকিৎসকরা যেমন রাগী সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে, তেমনি সুচিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গাবাসী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ইনডোর ও আউটডোর উভয় মিলে রোগী আসেন প্রায় ৩ শতাধিক। সেখানে মাত্র কয়েকজন চিকিৎসক দিয়ে দায়িত্ব পালন অনেকটা দূরহ হয়ে পড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের কক্ষগুলোতে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। সেই ভিড় এসে থেমেছে হাসপাতালের বারান্দাগুলোতেও। সেখানে চিকিৎসাধীন নয়ন কুমার নামের এক রোগী জানান, সারাদিনের মধ্যে মাত্র দু’বার ওয়ার্ড পরিদর্শনে আসেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে আমাদের বড় কোনো সমস্যা দেখা দিলেও চিকিৎসকদের ডাকলে কোনো সাড়া পাওয়া যায় না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শুভ নামের আরেক রোগী জানান, বর্হিঃবিভাগ থেকে টিকিট কেটে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাতে গেলে তার কক্ষটি শূণ্য দেখা যায়। অনেকটা বাধ্য হয়েই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট শরনাপন্ন হই।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বিভা লাহিড়ী জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যে কয়জন নার্স আছে তা চাহিদা তুলনায় খুবই নগণ্য যে কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে চিকিৎসকদের দাবি ১০০ শয্যার একটি হাসপাতালে যে সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকার কথা তা নেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মাসুদ রানা জানান, চাহিদার তুলনায় চিকিৎসক কম থাকায় রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. পীতাম্বর রায় বলেন, জনবল বাড়ানোর জন্য একাধিকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পত্র দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি