অসুস্থ হাসপাতালগুলো কী সেবা দেবে?
মোঃ আশরাফুল আলম
সরকারি-বেসরকারি অনেক হাসপাতালে সেবার নামে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছেন অনেক চিকিৎসকেরা। রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা সেবার পরিবর্তে দুর্ব্যবহার করছেন তাঁরা। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠিকমত কোনো চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। তাঁরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সাময়িক সময়ের জন্য ‘রাউন্ড’-এর নামে এলেও রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে আসে। কিন্তু হাসপাতাল নিজেই যদি অসুস্থ থাকে, তখন তাকে চিকিৎসা সেবা দেবে কে? অনেক হাসপাতাল তো এখন নিজেই অসুস্থ।সরকারী হাসপাতালে রোগীর জন্য সরকারি কিছু ঔষধ থাকলেও এখন তার দেখায় মিলেনা। এখন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলেই প্রথমে নার্স এসে বলে, এই ঔষধগুলো নিয়ে আসেন। এখানে এগুলো নেই।
আর এভাবেই শুরু হয় চিকিৎসা। অসহায় রোগীদেরকে হাসপাতালের যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়। অতিরিক্ত অর্থ দিলেই মেলে রোগী রাখার একটি বেড । তারপর প্রতি মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য ব্যয় করতে হয় অতিরিক্ত টাকা।
সরকারি হাসপাতালে আনাগোনা করে অনেক দালালরা। তারাই এসব টাকা লেনদেন করে চিকিৎসা প্রত্যাশীদের সাথে। নির্দিষ্ট সময়ের পরপর একজন নার্স তার দায়িত্বে থাকা রোগীকে দেখাশোনা করবে।
কিন্তু বিষয়টি অনেকাংশে সরকারি নিয়মেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে, বাস্তবে নয়। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে তাদের পরিচিত মহলের সহযোগিতায় চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন । আর যাদের পরিচিতজন নেই, তাদের দেখারও যেন কেউ নেই।অবহেলায় পরে থাকতে দেখা যায় অসংখ্য রোগীকে।
দুঃখজনক হলেও এখনো সত্য সরকারি অনেক হাসপাতালের দেয়ালে কান পাতলে শোনা যায় চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালে পরে থাকা অসহায় রোগীদের আত্মচিৎকার। বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থার সুযোগ নিয়ে যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ ক্লিনিকগুলোর অধিকাংশই হাতুড়ে ডাক্তারের কারখানা এবং প্রতিষ্ঠানের কোনো অনুমোদনও নেই। অনভিজ্ঞ নার্স, টেকনিশিয়ান ও কথিত ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। কিন্তু চিকিৎসার নামে তারা আদায় করে নিচ্ছে গলাকাটা ফি। রোগীরা প্রতারিত হচ্ছে এবং অনেক রোগী সুষ্ঠু চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছেন।
এসব অবৈধ প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে আর কেউ এমন ঘৃণিত অপরাধ না করতে পারে। সরকার ও প্রশাসনকে এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
মোঃ আশরাফুল আলম
চেয়ারম্যান
ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানরাইটস এন্ড ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি
- এই লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজের। এখানে প্রতিক্ষণ ডট কমের কোন নিজস্ব বক্তব্য নেই
====