কী হচ্ছে গ্রীনল্যান্ডে?
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
গ্রীনল্যান্ডের বিশাল এলাকার বরফ যে কোন সময়ের তুলনায় এ বছর তাড়াতাড়ি গলতে শুরু করেছে। ডেনমার্কের একদল বিজ্ঞানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গ্রীনল্যান্ডের বরফের স্তর সাধারণত বসন্তের আগমণের সাথে সাথে গলতে আরম্ভ করে। তাপমাত্রা বাড়ার কারনে কিছুটা তরলে পরিণত হয় এবং শীতকালে আবার জমে যায়।
এখন পর্যন্ত ২০১০ সালের ৫ মে ছিলো সবচেয়ে দ্রুততম সময় যখন গ্রীনল্যান্ডের বরফ ১০% গলে গিয়েছিলো। কিন্তু ডেনিশ মেটেরিওলজিক্যাল ইন্সটিটিউটের (ডিএমআই) উদ্ভাবিত আবহাওয়া মডেল এবং পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়, এ বছরের ১১ এপ্রিলের মধ্যেই প্রায় ১২% বরফের আচ্ছাদন গলে যেতে শুরু করেছে, যা নতুন রেকর্ড।
ডিএমআই এর পরিবেশ বিজ্ঞানী পিটার ল্যান্ডগ্রেন বলেন, তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এত তাড়াতাড়ি এত বিশাল পরিমাণ বরফ গলতে শুরু করতে পারে। এই অবিশ্বাস থেকে তারা নিজেদের উদ্ভাবিত পরিবেশ মডেলটি ঠিকঠাক মতো কাজ করছে কিনা সেটাও পরীক্ষা করে দেখেন বলে ল্যান্ডগ্রেন জানান।
গ্রীনল্যান্ডের নিম্ন অঞ্চলেই বরফ বেশি গলছে। কিন্তু ডেনিশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপের রবার্ট ফাউস্টো বলেন, বরফ স্তরের উঁচু অংশও, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উচ্চতায় অবস্থিত এবং অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি ঠান্ডা, সে অঞ্চলগুলোও উচ্চ তাপমাত্রার সম্মুখীন হচ্ছে।
আশা করা হচ্ছে যে, মাসের বাকি সময়টায় আবহাওয়া শীতল হয়ে যাবে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সমস্যা সেখানেই শেষ হবে না। গলে যাওয়া বরফের পানি তুষারের দিকে ধাবিত হবে এবং পুনরায় জমে যাবে। এভাবে তলদেশের বরফে ধাক্কা দেবে। এর অর্থ হচ্ছে, ভবিষ্যতে গলে যাওয়ার জন্য এই বরফের আর এখনকার মতো তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়বে না।
বর্তমান সময়ের তীব্র গরম অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাস ছিল সবচেয়ে অস্বাভাবিক রকম গরম মাস। এই মাসে বৈশ্বিক তাপমাত্রা গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১.৩ ডিগ্রি বেশি ছিল। এই রেকর্ডের আগের রেকর্ড ছিল জানুয়ারিতেই, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিস্ময়কর তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে চিহ্নিত করে।
এই এপ্রিলে গ্রীনল্যান্ডের অতীতের সব উচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে গ্রীনল্যান্ডের সাধারণ অধিবাসীরাও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। গ্রীনল্যান্ডের রাজধানী নুকের বাসিন্দা আকালুক পিটারসন যেমন বলেছেন, “সব কিছুই গলে যাচ্ছে।”
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া