এ যুগে নরখাদক!

প্রকাশঃ মে ৪, ২০১৬ সময়ঃ ৬:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

korowai_skullমানুষ চাঁদে গেছে, মঙ্গলে যাবে। মানুষ আবিষ্কার করেছে গুটি বসন্তের টিকা, আবিষ্কার করবে ক্যান্সারের প্রতিষধকও। কিন্তু কি অদ্ভূত বিষয় দেখুন, সভ্যতার এই চরম উৎকর্ষের সময়ও এমন কিছু মানুষ এখনো পৃথিবীতে আছে যারা মানুষ হয়ে মানুষের মাংস খায়।

নাহ্। আমি কোন হরর মুভির গল্প বলছি না। বাস্তবেই নরখাদকের অস্তিত্ব রয়েছে পৃথিবী। বাস্তবেই মানুষ মানুষের মাংস খায় আজও।

কিছু হাতে গোণা সাইকোপ্যাথ মানুষের মাংস খায় এটা আমরা জানি কিংবা কোন দুর্গম জায়গায় আটকা পড়লে বাধ্য হয়ে বেঁচে থাকতে মানুষ মৃত সঙ্গীর মাংস খেয়েছে এমন নজিরও আছে। কিন্তু এটা ভাবা একটু বিব্রতকরই বটে যে এখনো পৃথিবীর বুকে এমন আইনসঙ্গত নরখাদকের দল রয়েছে যারা মানুষ খাওয়াকে সংস্কৃতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।

কেউ কেউ অবশ্য অস্বীকার করে যে তারা সংস্কৃতির অংষ হিসেবে মানুষের মাংস খায় না। তবে আপনি যদি করওয়ায়ি মানুষদের জিজ্ঞেস করেন যে তারা মানুষের মাংস খায় কিনা তবে তারা হ্যাঁ সুচক উত্তরই দেবে। এই আদিবাসী গোষ্ঠীটি ইন্দোনেশিয়ান নিউ গিনিতে অবস্থিত,যারা নিজেদের সঙ্গী জ্ঞাতিভাইদের মাংস খায়। প্রাগৈতিহাসিক কাল থাকে এই আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে মানুষ খাওয়ার প্রচলণ রয়েছে এবং বাস্তবতা হচ্ছে, এই গোষ্ঠীটি অনেক অনেক বছর আধুনিক পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল যা তাদের সাহায্য করেছে এই মানুষের মাংস খাওয়ার প্রথাটি জারি রাখতে।

আজকের দিনে এই গোষ্ঠীতে সবচেয়ে সাধারণ মনুষ্য প্রবেশ বলতে বোঝায় খাকুয়া বা উইচ ডক্টরের প্রবেশ। এই খাকুয়াকে করওয়ায়ি মানুষেরা নির্যাতন করে, হত্যা করে, এবং খেয়ে ফেলে। খাওয়ার সময় প্রথমে তারা মানুষের মগজ খায়। করওয়ায়িদের বিশ্বাস খাকুয়া মানুষকে একদম ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে। তাই প্রত্যুত্তরস্বরূপ এরা খাকুয়াদের খেয়ে থাকে।

যখন সাংবাদিক পল রাফায়েলে করওয়ায়ি আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে থাকতে যান, তাঁর গাইড তাঁর সাথে নিজেদের মানুষ খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বেশ খোলাখুলি আলোচনা করে। এমনকি সে এই গুজবটি ভেঙে দেয় যে, মানুষের মাংসের স্বাদ শুকরের মতো। আসলে মানুষের মাংসের স্বাদ শূকরের মতো নয়, বরং এমুজাতীয় পাখি ক্যাসোওয়ারির মতো।

করওয়ায়ি ছাড়াও পৃথিবীতে আরো অনেক নরখাদক গোষ্ঠী রয়েছে বলে জানা যায়। এরা সাধারণত দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দূরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করে।এমনকি ২০১১ সালে মিডিয়া দাবি করে যে, জার্মান নাবিক স্টেফান রামিন নরখাদকদের হাতে মৃত্যুবরণ করেছেন। অবশ্যই যে, রামিনকে যে নরখাদকরাই খেয়ে ফেলেছে এ ব্যাপারে কোন অকাট্য প্রমাণ নেই। কিন্তু তাঁর শরীরের যা অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে তা হলো কেবল দগ্ধ ও বিভক্ত হাড়, দাঁত এবং কাপড়ের অবশিষ্টাংশ। এগুলো কর্তৃপক্ষ খুঁজে পায় পুরনো ক্যাম্পফায়ারের কাছে, আর রামিনের গাইড অনেক আগেই চলে গিয়েছিল। এসব প্রমাণই কর্তৃপক্ষকে নরখাদকের অস্তিত্বে বিশ্বাস আনতে বাধ্য করে।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

=========

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G