হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে হামিদ মোল্লার ভাগ্য বদল

প্রকাশঃ মে ৪, ২০১৬ সময়ঃ ৮:১৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:০৭ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

duck20160504131919 (1)

চীনারা এমনকি প্রাচীন গ্রীকরা হাঁসকে সৌভাগ্যের সহচর হিসেবে বিশ্বাস করতেন। হতে পারে এটা তাদের সরল বিশ্বাস বা বদ্ধমূল ধারণা। কিন্তু সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার আব্দুল হামিদ মোল্লার হাঁস পালন তার সৌভাগ্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘মোল্লা হ্যাচারি’ তাঁর গ্রামবাসীসহ অনেকের কাছেই এখন দারিদ্র্য জয়ের হাতিয়ার হিসেবে সম্মানজনক জীবিকা নির্বাহের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

উল্লাপাড়া থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে পাকা সড়ক বেয়ে ইসলামপুর বাস স্ট্যান্ড পেরুলেই ভূতগাছা গ্রাম। হামিদ মোল্লার “মোল্লা হ্যাচারির” সুবাদে এ গ্রাম এখন অনেকের কাছেই পরিচিত। সুসজ্জিত এ হ্যাচারিতে ২৫-২৮ দিনে ডিম থেকে বিভিন্ন জাতের হাসেঁর বাচ্চা ফুটানো হয়। এরপর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করেন নিজের জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলাগুলোতে। তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা। হামিদ মোল্লার এ সফলতার নেপথ্যে রসদ জুগিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ভূতগাছা গ্রামের বাসিন্দা ও হামিদ মোল্লার শুভাকাঙ্খী মনসুর আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, “ইসলামী ব্যাংক হামিদ মোল্লার জীবন সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছে”।

2892_divi-1

২০১১ সালে হামিদ মোল্লা ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আরডিএস) আওতায় মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ সুবিধা নিয়ে শুরু করেন হ্যাচারি ব্যবসা। বাড়তে থাকে তার হ্যাচারির হাঁসের বাচ্চার চাহিদা। ফলে দ্রুত প্রসার লাভ করে তার ব্যবসা।  উদ্যোমী হামিদ মোল্লা পর্যায়ত্ক্রমে ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার, ৭০ হাজার এবং ১ লাখ দশ হাজার টাকার বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহন করেন। পরবর্তীতে তিনি বাইমুয়াজ্জাল পদ্ধতিতে ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকার বিনিয়োগ গ্রহন করেন। বর্তমানে ৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ গ্রহন করে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তিনি। তাঁর খামারে একসাথে ১০ হাজার হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো যায়। এ বাচ্চাগুলো ৪ সপ্তাহের মধ্যে বিক্রির উপযোগি হয়ে ওঠে। উৎপাদন খরচ, শ্রমিকের বেতন, বিদ্যূৎ বিল ও পরিবহন খরচ বাদে মাসে অর্ধ লাক্ষাধিক টাকা মুনাফা করছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর হ্যাচারিতে ১৪ জন বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

হামিদ মোল্লার স্ত্রী আন্জুয়ারা বলেন, পাঁচটি মেয়ে সন্তান নিয়ে এক সময় খুব কষ্টে দিন কাটছিল তাদের। অভাবের সংসারে হাই স্কুলের গন্ডি পেরোনোর আগেই বিয়ে দিতে হয়েছিল তিন মেয়েকে। তিনি জানান, হ্যাচারির ব্যবসায় তাদের দিন ফিরেছে। বাড়ীতে পাকা ঘর উঠেছে। সন্তান পরিজন ভালই চলছে তাদের সংসার। এখন সুখেই কাটছে তাদের দিন। এ সফলতার জন্য ইসলামী ব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞ হামিদ মোল্লার পরিবার।

হামিদ মোল্লার মত দেশের ২০ হাজার গ্রামের ১০ লক্ষ পরিবারে স্বনির্ভরতা ও স্বচ্ছলতা এনেছে ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প। অতীতে দারিদ্রতা ছিল গ্রামের মানুষের সহযাত্রী। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান ও আর্থিক অন্তুর্ভুক্তিতে ভূমিকা রাখছে ইসলামী ব্যাংক। গ্রামের কর্মহীন দরিদ্র মানুষের দিনবদলের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ইসলামী ব্যাংক।

প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G