পাহাড় বেয়ে যেতে হয় স্কুলে

প্রকাশঃ জুন ১৫, ২০১৬ সময়ঃ ৩:১৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:১৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

School 01চীনের সিচুয়ান প্রদেশে আতুলার গ্রাম। আখরোট আর মরিচ চাষ করেই মূলত ওখানকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়। কিন্তু শিক্ষার আলো থেকে তারা বঞ্চিত। তাই নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে গ্রামের সাধারণ মানুষেরা মোড়লের সহযোগিতায় গড়ে তুলেছে একটি স্কুল। যেখানে ছোট ছোট শিশুদেরকে স্কুলে যেতে হয় বিশাল সব দুর্গম পাহাড় অতিক্রম করে ২৬২৫ ফুট উপরে। টানা ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে পাহাড়ের গা বেয়ে উঠতে হয় তাদেরকে।

খাঁড়া ওই পাহাড়ের গায়ে গাছের শিকড় গজিয়েছে। সেই শিকড় দিয়েই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে মই। আলাদা আলাদা ১৭টি মই বেয়ে ৬-১২ বছরের এখানকার শিশুরা যাচ্ছে স্কুলে। তবে অনেক জায়গায় কিন্তু এবড়োখেবড়ো পথ বেয়েই উঠতে হয় শিক্ষার্থীদের। পড়াশোনা শেষে ওই পথ বেয়ে নেমে আসছে তারা। কয়েকটি জায়গায় গ্রামবাসীরা নিজের উদ্যোগেই লোহা এবং গাছের ডাল দিয়ে তৈরি করেছেন মই। গাছের শিকড় আঁকড়ে শিক্ষার্থীরা উঠছে আর নামছে। এত উঁচুতে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকায় প্রতি দুই সপ্তাহে একবার হয় এই স্কুল। কিন্তু তাতেও নিরাপত্তার ঝুঁকি কমে না, কারণ পা ফসকে গেলেই পড়তে হবে দুহাজার ফুট গভীর খাদে।

school 02‘বেইজিং নিউজ’ এর পুরস্কার পাওয়া আলোকচিত্রী চেন লি ওই গ্রামের ১৫ শিশুর স্কুলে যাওয়ার প্রথম ছবি তোলেন। তিনি বলেছেন, ‘কোন সন্দেহ নেই যে ওই দৃশ্য দেখার পর আমি বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম।’ ওই ঘটনাকে ‘বেদনাদায়ক বাস্তবতা’ মন্তব্য করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার এই ছবি গ্রামটিতে পরিবর্তন আনতে সাহায্য করতে পারে।

চীনের ইংরেজি দৈনিক ‘চায়না ডেইলি’ পাহাড় বেয়ে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার ওই ছবি প্রচারের পরই তা বিশ্ব গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খাঁড়া পাহাড় বেয়ে স্কুলে যাওয়ার ওই দৃশ্য ধারণ করে সিসিটিভি নিউজ-এর ৯০ মিনিটের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

আনন্দের সংবাদটি  হলো—শিক্ষার প্রতি এই শিশুদের আগ্রহ দেখে-আর তাদের কষ্ট দেখে চীনা সরকার শীঘ্রই এই পাহাড়ি দুর্গম পথকে তাদের চলাচল উপযোগী করে তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে। প্রয়োজনে বিকল্প পথে কিংবা নিরাপত্তা বলয় থাকা সিঁড়ি ব্যবহার করা হবে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এস আর এস

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G