আরামের খোঁজ ঢিলেঢালা পোশাকে
শারমিন আকতার:
পোশাকে ‘আরামদায়ক’ বলে একটা শব্দ আছে। দেখতে সুন্দর আর পড়তে আরাম এমন পোশাকই যে কারও পছন্দ হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে কি আমরা তেমনটা দেখতে পাচ্ছি? সময়ের মারপ্যাচে পড়ে তরুণীরা এখন আরামের চেয়ে চোখ ঝলসানো জাতীয় কিছু স্থুল আঁটসাঁট পোশাকের দিকে বেশি মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। এতে তারা দুটো বিষয় হারিয়ে ফেলছে নিজেদের অজান্তে।
এক. পোশাকী আরাম দুই. নিজস্ব ব্যক্তিত্ব। পড়তে অস্বস্তি লাগছে তবুও দম বন্ধ করা টাইট পোশাক পড়ে বসে আছেন। এটা তার ভালো লাগছে না মোটেও। কিন্তু অনেকেরতো তাকে ভালো লাগছে! এ ধরণের ভুল ধ্যান ধারণা থেকে তারা নিজেদের মনের বিরূদ্ধে গিয়ে আঁটসাঁটো পোশাক পড়তে বাধ্য হন।
বাহিরের এত অসহ্য গরম আর ভীড়-গাদাগাদির মধ্যে জীবনটা নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। তার মাঝে মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে মাথার ভেতর কিলবিল করে দুষ্ট পোকা। তার কুমন্ত্রণায় পড়ে প্রচন্ড টাইট পোশাক পড়লেন। তারপর নিশ্বাসটা বন্ধ না হলেও মেজাজটা ঠিক খিটখিটে হয়ে যাবে নিজের অজান্তে। কারণ সেই আরামের অভাব।
সৌন্দর্য মানুষের ভেতরে বসবাস করে। বাহিরে তার ঝিলিক দেখা যায় মাত্র। সৌন্দর্যে এক ধরণের পরিমিতিবোধ থাকে। তাতে বেশিও থাকে না আবার একেবারে কমও থাকে না। ভুলে যাবেন না, প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব কিছু সংস্কৃতি আছে।
আমাদের পোশাকী সংস্কৃতির মধ্যে ঢোলাঢালা-আরামদায়ক ব্যাপারটি বেশ ভালোভাবেই আছে। তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে চললে দুকূল বজায় রাখাটা বেশ সহজ হয়। তাই বলে দেখতে খারাপ লাগে একথা বলা যাবে না মোটেও। চোখকে নিজস্ব সংস্কৃতির স্পর্শে গড়ে উঠা সৌন্দর্যের সাথে নিয়মিত পরিচিত করে তুলুন।
বাইরের সংস্কৃতি আর দূর নক্ষত্রে বসবাস করা তারাদের অনুসরণ করবেন না। নিজের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিন। দেখবেন আপনি দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন দিনের পর দিন। যা কল্পনার বাস্তবের সাথে মিল নেই একটুও তা আপনার হতে পারে না। তবে স্বপ্নে হরহামেশা আবোল-তাবোল দেখতেই পারেন; বাস্তবে নয়।
তাহলে নিজের ভেতরকার আমির সাথে যোগাযোগ করে খুঁজে বের করুন নিজের আসল সৌন্দর্যকে। বাড়িয়ে তুলুন আরামপ্রিয়তাকে। মনে রাখবেন, যাহা বেঢ়প তাহা অপরিমিতিবোধে ভরপুর। আরামে থাকুন, ঢিলেঢালো পোশাক পড়ুন।
======