প্রেমিকের কথায় অনশন ভাঙছেন লৌহ মানবী?
ভারতের মণিপুর রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (এএফএসপিএ) প্রত্যাহারের দাবিতে দেড় দশক ধরে অনশন করছেন ইরম শর্মিলা চানু। সেই অনশন ভাঙতে চলেছেন এই লৌহ মানবী।
গত মঙ্গলবার সকালে সে কারণেই শর্মিলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। সেখানে বিচার বিভাগীয় হাকিমের সামনে অনশন ভাঙবেন তিনি। তবে অনশন ভাঙার পর তিনি এখনই বাড়ি ফিরবেন কিনা তা জানা যায়নি।
২০০০ সালে এএফএসপিএ প্রত্যাহারের দাবিতে মণিপুরে আন্দোলন শুরু হয়। সেখানে সরকারি বাহিনীর গুলিতে ১০ জন প্রাণ হারান। এরপর ঐ বছরের ৫ নভেম্বর থেকে অনশন শুরু করেন শর্মিলা। এর মধ্যে একাধিকার মুক্তি পেলেও অনশন না ভাঙায় ‘আত্মহত্যা চেষ্টার’ অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন থেকেই তাকে নাকে নল দিয়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।
১৬ বছর কেটে গিয়েছে অনশন মঞ্চে, তবু নিজের সিদ্ধান্ত থেকে টলানো যায়নি শর্মিলাকে। তাই তাঁর নামের পাশে জুড়ে গেছে ‘লৌহ মানবী’ তকমা। আজ আর কয়েক ঘণ্টা পরেই সেই অনশন ভাঙতে চলেছেন তিনি।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ভারতের যে সব রাজ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইন জারি রয়েছে (যেমন কাশ্মীর ও উত্তর পূর্বের কয়েকটি রাজ্য), সেখানেও যা খুশি তাই করতে পারবে না সেনাবাহিনী। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর গত ২৭ জুলাই আদালতে দাঁড়িয়ে অনশন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন শর্মিলা। শুধু তাই নয়, অনশন ভেঙে প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোর সঙ্গে ঘর বাঁধতে চান সে কথাও জানান ৪৪ বছরের এ অগ্নিকন্যা। মণিপুরের আগামী নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ার কথাও জানান তিনি।
তবে তাঁর ঐ সিদ্ধান্তের পর ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েন শর্মিলা। বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহার না করা সত্ত্বেও তাঁর সিদ্ধান্তে অভিযোগের অঙ্গুল উঠছে মূলত প্রেমিক ডেসমন্ডের দিকেই। অনেকেই মনে করছেন, ডেসমন্ড আসলে ভারত সরকারের পাতা ফাঁদ। শর্মিলার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তাঁর পরিবারের মানুষজনও। তবু নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে আজ অনশন ভাঙছেন তিনি। সূত্র : আনন্দবাজার, বিবিসি।
প্রতিক্ষণ/এডি/একে
=====