‘মা’ হলেন এক বছরের শিশু!

প্রকাশঃ আগস্ট ১১, ২০১৬ সময়ঃ ৫:১৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:১৭ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

extra-large_080816064158

মেয়েটির বয়স সবে মাত্র এক বছর। যেখানে সে নিজেই একটি শিশু সেখানেই কিনা সে একটি বাচ্চার মা। কি অদ্ভুদ মনে হচ্ছে? সত্যিকার অর্থে তাই।  ঘটনাটি অদ্ভুদ হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই ধরনের ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটতে শোনা যায়।

তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৮ কেজি ওজনের মেয়ে জন্ম দিয়েছে সাড়ে তিন কেজি ওজনের একটি সন্তান।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ রকম ঘটনাকে বলা হয় ফেটাস ইন ফেটু, অর্থাৎ একটি শিশুর মধ্যে আরেকটি শিশুর ভ্রুণ বেড়ে ওঠা।

তামিলনাড়ুর শ্রমিক রাজু ও সুমতির মেয়ে নিশা জন্মের পর থেকেই নিশার পেটটা ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বড়। রাজু আর সুমতি বিষয়টিকে  তেমন গুরুত্ব না দিলেও দিন দিন নিশার পেট বাড়তেই থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস ও খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও যখন সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। তখন রাজু আর সুমতি মেয়েকে নিয়ে যান ডাক্তারের কাছে।

ডাক্তার ডি বিজয়গিরি শিশুটিকে আলট্রাসনোগ্রাফি ও স্ক্যান করে দেখেন, নিশার পেটের ভেতর বেড়ে উঠছে একটি ভ্রুণ, যা নিশারই শরীরের রক্তে ও খাদ্যে পুষ্ট হয়ে উঠছে।

অবশেষে চিকিৎসক বিজয়গিরি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারটি অপরিহার্য হলেও সহজ ছিল না মোটেও। কারণ নিশার গর্ভস্থ ভ্রূণটির সঙ্গেই তার যকৃৎ, বৃক্কের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লেগে ছিল।

শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে ওই অস্ত্রোপচার করা হয়। বিজয়গিরির নেতৃত্বে চার সদস্যের চিকিৎসকদল ১২ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপাচারের পর নিশার পেট থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের ভ্রূণটিকে বের করে আনেন। জটিল অস্ত্রোপচারের পর এক বছরের শিশুটি সুস্থ থাকলেও তার পেটে থাকা ভ্রূণটিকে বাঁচানো যায়নি।

কোনও শিশু গর্ভে থাকাকালে তার যমজ ভাই বা বোনের ভ্রূণ আলাদাভাবে বেড়ে না উঠে অনেক সময় ওই শিশুটির শরীরেই বেড়ে উঠতে থাকে। পরে সেই শিশুর জন্ম হওয়ার পরেও অনেক সময় তার শরীরের ভেতরে স্থাপিত সেই ভ্রূণের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে।

তখন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করে আনতে হয় সেই ভ্রূণটিকে। ফলে বিষয়টি একটি সন্তানের জন্মলাভেরই চেহারা নেয়। বিশ্বে ৫ লাখ শিশু জন্ম নিলে তাদের মধ্যে মাত্র একজনের মধ্যে ফেটাস ইন ফেটু দেখা যায়।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
20G