পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
প্রতিক্ষন ডেস্কঃ
চাঁদপুরে স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবোস করার অপমান সইতে না পেরে সাথী আক্তার (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে জেলা সদরের বাগাদী ইউনিয়নের মধ্য বাগাদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সাথী স্থানীয় বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। সাথীর বাবা হতদরিদ্র দেলোয়ার হোসেন তালুকদার চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে একটি তেলের আড়তে শ্রমিকের কাজ করে।
এদিকে ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় স্কুলছাত্রী সাথীর বাবা দেলোয়ার হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন। এতে চার জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান,, সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মধ্য বাগাদী গ্রামের শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সাথী আক্তার গত ২৭ আগস্ট শনিবার পরীক্ষার প্রথম দিন বেতন ও পরীক্ষার ফি’র বকেয়া টাকার না দেওয়ায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা বেগম তাকে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে কান ধরে উঠবোস করান।
এরপর ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে এসে বিষয়টি বাবা-মাকে জানান। কিন্তু পরদিন পূর্ণ বকেয়া টাকা না দিতে পারায় সাথী আর পরীক্ষা দিতে যায়নি। পরে ক্ষোভ-অভিমানে বেলা ১১টার দিকে সবার অগোচরে সে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল গাজী বলেন, ‘মেয়ের বাবা জানিয়েছেন, বেতনের জন্য তার মেয়েকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখে। গত সোমবার ২৬০ টাকা তাকে দেই, কিন্তু ২০ টাকা কম ছিল। এ জন্য সে আর (সোমবার) পরীক্ষা দিতে যায়নি।’
এলাকার কয়েকজন অভিযোগ করেন, এর আগেও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিষ্ঠুর আচরণের কারণে আরো কয়েক শিক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে ও বিষপানে আত্মহত্যা করে। সপ্তাহ দুয়েক আগে পরীক্ষার ফির টাকার জন্য নানুপুর গ্রামের এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ছাড়া গত বছর একই বিষয় নিয়ে শিক্ষকরা অপমান করায় অভিমান করে দুই ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উল্লাহ ওলি বলেন, ‘সাথীর আত্মহত্যার ঘটনা শুনেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে রয়েছে। গতকাল সোমবার সাথীর বাবা দেলোয়ার শেখ চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্তের স্বার্থে আসামিদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’
প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম