সুপার মুনের সৌন্দর্য দেখলো বিশ্ববাসী
শারমিন আকতার:
শিল্পী মান্না দে’র চাঁদ নিয়ে গাওয়া গানটির কথা মনে পড়ছে আজ এই ভরা চাঁদের অভূতপূর্ব অভাবনীয় সুন্দর ছবি দেখে…
‘ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে
কারো নজর লাগতে পারে
মেঘেদের উড়ো চিঠি
উড়েও তো আসতে পারে ’।।
১৯৪৮ সালের পর আজ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এসেছিল উজ্জ্বলতম চাঁদ। এই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্বের কোটি কোটি চন্দ্রপিপাসু মানুষ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, সোমবার পূর্ণিমার রাতে কাছাকাছি এসেছে চাঁদ ও পৃথিবী। সৌর জগতের গ্রহ পৃথিবী ও পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদের গড় দূরত্ব তিন লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। আজ সেই দূরত্ব ২৭ হাজার ৮৮৯ কিলোমিটার কমে হয় তিন লক্ষ ৫৬ হাজার ৫১১ কিলোমিটার।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, কোনো পূর্ণিমার দিনে পৃথিবী ও চাঁদকে এত কাছে শেষ দেখা গিয়েছিল; প্রায় ৬৯ বছর আগে। সেসময় উভয়ের মধ্যে একটু বেশি দূরত্ব কমেছিল; ২৭ হাজার ৯৩৮ কিলোমিটার। পুনরায় এটি দেখা যাবে ১৮ বছর পর ২০৩৪ সালে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা সুপারমুনের বিশেষ মুহূর্তের ছবি…
হরিণ হেঁটে যায় হরিণের তালে, এমন সুন্দর সান্ধ্য চাঁদে তার কী বা যায় আসে? তাইতো সে নির্লিপ্ত ভঙ্গীমায় সরল পথের আলো-আঁধারীর মাঝে ফেরার পথ খুঁজে বেড়ায়। দেখেও সে দেখে না এক ক্ষণিকালয়ের শুভ্র শশীর কুসুমলাল দীপ্তিকে।
চাঁদের আলোয় মশাল জ্বলবে কিনা জানি না, তবুও শক্তিধর দেশের সুউচ্চ স্ট্যাচুতো সে চেষ্টায় করছে! সুপার মুন তাকে ধরা দিয়েছে, আলোকিত করেছে তার চারপাশ।
গুটগুটে অন্ধকারের আঁধারকে ছাপিয়ে হালকা আলোর স্পর্শ পাওয়া চকচকে রাস্তা ধরে কোন সোনালী চাঁদের পানে নিরন্তর ছুটে চল তুমি? হে পথহারা পথিক, তুমি কি জানো কোন সুদূরের সোনালীর পানে তোমার এগিয়ে চলা? একি নিছক হেয়ালী নাকি আলেয়ার চোখ ধাঁধানো চাতুরতা?
কে কার সাথে হেয়ালীপনায় লিপ্ত, সমুদ্র জলরাশি নাকি টুকটুকে লাল ঐ চাঁদ? এমন চোখ ধাঁধানো মন ভোলানো আগুন লাগা বহুরূপের আঁধার তুমি। কখনও দাও ধরা আবার কখনও ঠিক এভাবেই মিলিয়ে যাও সামান্য লালচে পরশ বুলিয়ে।
সুদূর কানাডায় বাস করা কানাডিয়ান কন্যার হাতে অবশেষে ধরা দিল সেই অধরা সুপার মুন। সে আনন্দ কি নিছক মনে হয়? আবার কখন আসবে সে, লাল পরশ বুলিয়ে দেবে নতুন কোনো আগন্তুকের হাতে। সে পর্যন্ত আমরা সবাই অপেক্ষায় থাকলাম। হয়তো দেখবো আবার হয়তো বা অন্য আলোয় ধরা দেবে এ অনিন্দ্য সুন্দর কুসুমকুমারী সুপার মুন।