এবার বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটিতে ভারতের মুখ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির পর এবার এ ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বুধবার পাটনা থেকে কলকাতা ফেরার পথে প্রথমে আধ ঘন্টা বাড়তি সময় আকাশে উড়ে বেড়াতে হয় এরপর ‘লো অন ফুয়েল’এর সংকেত পাঠায় পাইলট। সম্পূর্ণ বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
বিমানবন্দর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, কলকাতায় নামার সময় ইন্ডিগোর ঐ বিমান লাইনে আট নম্বরে ছিল। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ঐ বিমানচালককে জানায় যে, একে একে সাতটি বিমান নামার পরে তবেই নামতে পারবে মমতার বিমান। এই অবস্থায় প্রায় বাড়তি আধ ঘণ্টা আকাশে উড়ে বেড়ায় বিমানটি। শেষ পর্যন্ত রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করে।
একই বিমানে ছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিমান থেকে নেমে তিনি অভিযোগ করেন, চক্কর কাটার সময় বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছিল। গোটা ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বিমানে থাকা সত্ত্বেও কেন এমন ঘটনা ঘটল তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে বিধাননগর পুলিশ ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন পাটনা থেকে কলকাতার মাথায় এসে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ইন্ডিগোর পাইলট এটিসি-কে ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠান।
‘কোনও বিমান নির্দিষ্ট বিমানবন্দরে যখন নামতে আসে, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিয়ম অনুসারে তখন দু’টি বিকল্প বিমানবন্দরে পৌঁছানোর মতো জ্বালানি তাকে রাখতেই হয়। সে হিসেবে এ দিন ইন্ডিগোর বিমানটির কাছে বিকল্প বিমানবন্দর রাঁচি ও ভুবনেশ্বরে যাওয়ার মতো জ্বালানি থাকার কথা। প্রকৃতপক্ষে তা ছিলও।’ তা হলে ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠানোর কারণ কী? বললেন বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় একই সময় কলকাতা আসা তিনটি বিমান ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠায়। ইন্ডিগোর ওই বিমানটি ছাড়াও ছিল আগরতলা থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এবং বেঙ্গালুরু থেকে আসা স্পাইসজেটের বিমান।
বিমানবন্দরের এক অফিসার বলেন, ‘ইন্ডিগো যখন ‘লো অন ফুয়েল’ কল করে তখন তার আগে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে ইন্ডিগো-কে আগে নামাব কিনা। এয়ার ইন্ডিয়া জানায় তারও ‘লো অন ফুয়েল’।’
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরে দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স মোতায়েন রাখা হয়।
মন্ত্রী ফিরহাদের দাবি, ‘এটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। পাইলট বারবার জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছে জানানো সত্ত্বেও বিমানটি আধ ঘণ্টার ওপর আকাশে চক্কর কাটে। ক্র্যাশ ল্যান্ডিং হবে বলে পুরো ব্যবস্থা করা ছিল। এর থেকেই ষড়যন্ত্রটা পরিষ্কার হয়ে যায়।’
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ