সাগর তলে ডুবে যাওয়া মহাদেশ
একবার কল্পনা করুন তো, একটি মহাদেশের প্রায় ৯৪ শতাংশই লুকিয়ে আছে সাগরের পানিতে! আর সামান্য কিছু অঞ্চল পানির ওপর মাথা তুলে উঁকি দিচ্ছে। তবে এ কোনো মিথ্যের ফুলঝুড়ি নয় কিংবা কবির কল্পনাও নয়; গবেষণা চালিয়ে যাওয়া একদল বিজ্ঞানী দাবী করছেন এমনটি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া এমনই একটি মহাদেশ লুকিয়ে আছে নিউজিল্যান্ডের ঠিক নীচে। নাম দেয়া হয়েছে জিল্যান্ডিয়া।নিশ্চয় ভাবছেন, তাহলে জিল্যান্ডিয়ার নাম আরেকটি মহাদেশ হিসেবে কি যুক্ত হবে ভূগোলের পাঠ্য বইতে?
‘জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা’য় প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘জিল্যান্ডিয়া’র আয়তন ৫০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার, যা পার্শ্ববর্তী অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই তৃতীয়াংশের সমান।এমনকি তাঁরা বলছেন, নিউজিল্যান্ড এই মহাদেশের জেগে থাকা পবর্তচূড়া মাত্র!
প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক নিউজিল্যান্ডের ভূতত্ত্ববিদ নিক মর্টিমার বলেন, গত দু্ই দশক ধরে চালানো গবেষণায় জিল্যান্ডিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করছিলেন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় তা সফলভাবে সম্পন্ন করার পরেই এটিকে মহাদেশ হিসেবে দাবী করা হয়। তিনি আরও বলেন, এই গবেষণার একটা ভিন্নমাত্রার বৈজ্ঞানিক তাৎপর্যও রয়েছে। একটি মহাদেশ সাগরে তলিয়ে যাওয়ার বহুকাল পরে আজও অখন্ড রয়েছে। এর ফলে প্রমাণিত হয়, অনেক অনেক বছর আগে পৃথিবীর উপরিভাগের স্তর ভেঙে মহাদেশগুলো তৈরি হয়েছিলো।
কোনো একটি ভূখণ্ডকে মহাদেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠন হয়নি। বেশিরভাগ বিজ্ঞানী যদি জিল্যান্ডিয়া’কে আরেকটি মহাদেশ হিসেবে মেনে নেন; তাহলে এটি আক্ষরিকঅর্থে স্বীকৃতি পাবে। সেদিন হয়তো আর দূরে নেই; যখন আমরা শিখবো, পৃথিবীতে মহাদেশ সাতটি নয়, বরং আটটি।