পিছিয়ে নেই আরব নারীরা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নারী স্বাধীনতা নেই বললেই চলে। ছোটবেলা থেকেই মেয়েরা পর্দা প্রথার কঠিন শেকল দ্বারা আবদ্ধ থাকে। সেই সমাজে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করাকে কেউ সহজভাবে নেয় না।
বিশ্ব বিখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নাইকি সম্প্রতি আরব দেশের নারী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন চিত্র নির্মাণ করেছে। প্রচার শুরু হবার পর থেকেই বিজ্ঞাপনটি সারা পৃথিবীর নারী অধিকার সচেতন মহলে সাড়া ফেলে। বিজ্ঞাপনটিতে আরব বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি দেশের পাঁচ জন নারী ক্রীড়াবিদের সফলতা তুলে ধরা হয়েছে।
জাহরা লারি, এই পাঁচ জন নারী ক্রীড়াবিদের একজন। আরব আমিরাতের প্রথম নারী আইস স্কেটার। তাঁকে ‘বরফের রাজকন্যা’ নামেও ডাকা হয়। শত বাধানিষেধ আর কুসংস্কারের বেড়াজাল ছিন্ন করে তিনি সফলতা লাভ করেছেন। সমাজের রক্তচক্ষু তাকে খেলায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে পারে নি।
লারি বলেন, ‘ওরা বলত আমি পুরুষ মানুষের সামনে নাচছি। এটা নাকি সমাজ স্বীকৃত নয়। কিন্তু এটা একটা খেলা। কিন্তু আমি জানি আমি কোন ভুল করছি না। আমি মুসলমান। আমি আরব দেশের মেয়ে। আমি পর্দা করি। এবং আমার খেলাকে ভালবাসি। কোনকিছুই আমার পথে বাধা হয়ে থাকতে পারবে না।’
লারি পশ্চিমা সমাজে আরব নারীরা পশ্চাৎপদ বলে যে ধারণা বিদ্যমান রয়েছে তা পুরোপুরিই ভ্রান্ত বলে দাবী করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আরব নারীরা বিশ্বের যে কোন দেশের নারীদের চেয়ে কোন অংশেই পিছিয়ে থাকবে না।
লারি ছাড়াও তিউনিসিয়ার অলিম্পিক পদকপ্রাপ্ত ফেন্সার ইনেস বউবাকরি, আরব আমিরাতের ট্রেইনার আমাল মুরাদ, সৌদি আরবের গায়িকা বিলকিস ফাতহি এবং জর্ডানের বক্সার আরিফাকে উপস্থাপন করা হয়।
সৌদি আরবের অভিনেত্রী ফাতিমা আল বানাওয়ি বিজ্ঞাপনটিতে কণ্ঠ দেন। শুটিং কর হয় দুবাইতে।
‘আরব মেয়েদের খেলাধুলায় উৎসাহ এবং অনুপ্রেরনা দেয়ার জন্য এই বিজ্ঞাপনটি আমরা বানিয়েছি’, বলেন নাইকির যোগাযোগ ব্যবস্থাপক হিন্দ রশিদ।
মাত্র দুই দিনেই বিজ্ঞাপনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩০ লাখ বার দেয়া হয়েছে। অবশ্য রক্ষণশীল সমাজ বিজ্ঞাপনটির দৃশ্য ও বার্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু করেছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল