যে কারণে বিলম্ব হচ্ছে জঙ্গিবিরোধী অপারেশন

প্রকাশঃ মার্চ ২৭, ২০১৭ সময়ঃ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

সিলেট প্রতিনিধি :

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জঙ্গি আস্তানা ঘিরে সেনাবাহিনীর অভিযান চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। সকাল থেকেই ওই এলাকায় থেমে থেমে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

অভিযানের মধ্যেই শনিবার রাতে জোড়া বিস্ফোরণে পুলিশসহ ছয়জন নিহত হওয়ার পর শিববাড়ি থেকে নগরীর কদমতলী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী।

তবে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ অব্যাহত রয়েছে। সেনাকমান্ডো, সোয়াট, র‌্যাব, পুলিশ নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনতার উৎকণ্ঠা। তবে ‘অপারেশন টোয়ালাইট’সফলে বিলম্বের বেশ কয়েকটি কারণ ইতোমধ্যে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আতিয়া মহলে প্রবেশের প্রতিটি গেটে শক্তিশালী বিস্ফোরক লাগিয়ে রেখেছে জঙ্গিরা। এছাড়া ভবনের নিচে বাঙ্কারে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও গোলাবারুদসহ বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অবস্থান করছে জঙ্গিরা।

ফলে ভবনের ভেতরে ঢুকতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গিরা এখন পর্যন্ত ১০টি গ্রেনেড ও ৫ থেকে ৬টি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

এদিকে, সিলেটে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান প্রতিহত করতে জঙ্গিরা ভয়াবহ কৌশল নিয়েছে। একদল জঙ্গি আস্তানায়, আরেকদল বাইরে অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে জঙ্গিরা উৎসুক জনতার মধ্যে ঢুকে দুই দফা হামলা চালিয়েছে।

পুরো ভবন সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ঘিরে রেখেছে। অন্যদিকে, ভবনের চারপাশ এলাকায় আরেক স্তরে সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে। আতিয়া মহল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পুরো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে র্যাব-পুলিশ।

এছাড়া জঙ্গিদের পরিকল্পনা ছিল সোয়াটসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আক্রমণ করলে তারা বাইরে থেকে আক্রমণ করবে। এই এলাকার আশপাশে আরও জঙ্গিদের অবস্থান রয়েছে বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, এই অভিযান কখন শেষ হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানে না তারা। লোকালয়ে জঙ্গিদের এমন শক্তিশালী অবস্থান ভাবিয়ে তুলেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। জঙ্গিদের মাইকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালেও তারা আত্মসমর্পণ করেনি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল রাশিদুল হাসান জানান, সেনা কমান্ডোরা চেষ্টা করছেন জঙ্গিদের জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করতে।

তিনি বলেন, জঙ্গিরা বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ জমা করেছিল। তারা বিস্ফোরক দিয়ে কমান্ডোদের প্রবেশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এ জন্য অপারেশনটি অনেক সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হচ্ছে। জঙ্গিদের জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তাই অনেক সময় লাগছে।

এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধারণা করা হচ্ছে আতিয়া মহলের নিচতলার বাঙ্কারে ৫-৭ জন জঙ্গি থাকতে পারে। অভিযানে অংশ নেয়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/নসি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G