ঝালকাঠির বিস্তৃত মাঠ জুড়ে সূর্যমুখীর হাসি
মোঃ আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
একের পর একর ছেয়ে গেছে ফুলে ফুলে। মাঠ জুড়ে কেবলই হলদে আভা। সূর্যমুখীর স্নিগ্ধ হাসি। সেই হাসি দেখতে প্রতিদিন বিকালে মানুষের ঢল নামছে । আর বিস্তৃত এই মাঠকে যিনি নিজের হাতে সাজিয়েছেন তার নাম গোপাল কৃষ্ণ। পেশায় তিনি বর্গা চাষী।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশংগল ইউনিয়নের শেওতা গ্রামের কৃষক গোপাল কৃষ্ণ এবছর ২৫ একর জমি বর্গা নিয়ে সূর্যমূখীর চাষ করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গোপাল কৃষ্ণ সাহার নিজের কোন জমি নেই। তিনি পতিত ২৫ একর জমি; একর প্রতি ৮শ টাকা করে খন্ডকালীন এই চাষাবাদের জন্য লিজ নিয়েছেন।
জানা যায়, মূলত কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়েই গোপাল কৃষ্ণ সাহা সূর্যমুখীর চাষ করেছেন । কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তার এই চাষাবাদ মনিটরিং করছেন।
উল্লেখ্য, এক সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ব্র্যাক দাতা সংস্থা ইউএসএইড ২৫ টনের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সূর্যমূখী চাষের জন্য কৃষকদের সার, বীজ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমূখীর চাষ শুরু হয়। কিন্তু ২ বছর পূর্বে দাতা সংস্থা প্রকল্পের সহায়তা প্রত্যাহার করে নেয়ায় সূর্যমুখীর চাষ মুখ থুবড়ে থাকে। তবে এ বছর গোপাল কৃষ্ণ সাহা নলছিটি উপজেলায় এবং কাঁঠালিয়া উপজেলায় কয়েকজন কৃষক স্বল্প পরিসরে নিজ উদ্যেগে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছেন।
গোপাল কৃষ্ণ সাহা জানান, প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ২৫ একর জায়গায় ‘জিকে হাইব্রিড’ সুবর্ণা জাতের সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ইতিপূর্বেও অল্প পরিসরে সূর্যমূখীর চাষ করেছেন। তিনি আশা করেন, কোন বৈরি দূর্যোগের শিকার না হলে এই চাষাবাদ থেকে ২ লক্ষ টাকা নীট লাভ পাবেন।
গোপাল কৃষ্ণ সাহা এ বছর এই বিশাল আয়তন জায়গা নিয়ে সূর্যমূখীর চাষ করে উপজেলায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টির পাশাপাশি সাহস দেখিয়েছেন; যা অন্য কৃষকদের অনুপ্রাণিত করছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, ‘নি:সন্দেহে ফলাফল আশাব্যঞ্জক হবে। আমাদের কৃষি বিভাগ সার্বক্ষনিকভাবে এই চাষাবাদে পরামর্শ এবং অন্যান্য সহযোগিতা করে আসছে।’
প্রতিক্ষণ/এডি/রন