হেফাজত রাজনীতিতে জড়াবে না: শফী

প্রকাশঃ এপ্রিল ৩০, ২০১৭ সময়ঃ ৩:৪০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৪০ অপরাহ্ণ

আল্লামা শাহ আহমদ শফী (ফাইল ছবি)

হেফাজতে ইসলাম সাংগঠনিকভাবে কখনোই রাজনীতিতে জড়াবে না, ভোটের রাজনীতিতে কাউকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থনও জোগাবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

হেফাজত আমীরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

হেফাজতের আমির বলেন, কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেয়ার পর হেফাজতে ইসলামকে কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে একাকার করে বিদ্বেষমূলক নানা মিথ্যা কাহিনী ফেঁদে ঈমান-আকিদাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠনটিকে রাজনৈতিক রূপদানের ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে কোনো কোনো মিডিয়া। ব্যক্তিগতভাবে আমার নামেও মিথ্যা গল্প তৈরি করছে।

তিনি বলেন, স্কুলের পাঠ্যবই, গ্রিক দেবী থেমিস ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে রুষ্ট হয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা থেকেই এসব করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, একদিকে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতির ছিদ্রান্বেষণে হাস্যকর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করছে এ মহলটি। অন্যদিকে সিলেবাস নিয়ে অমূলক প্রশ্ন তুলছে এবং কওমি সনদের মানদণ্ড নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। কওমি মাদ্রাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ও দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতিগুলোকে ভিত্তি ধরে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্সের (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান করায় বাম সেকুলারপন্থী গোষ্ঠী ও ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়াগুলোর গায়ে জ্বালা ধরেছে বলেও অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।

তিনি আরও বলেন, কওমি মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় সাধারণ জ্ঞানের পাশাপাশি উচ্চতর আরবি ভাষাজ্ঞান ও পবিত্র কোরআন-হাদিসের সর্বোচ্চ স্তরের মৌলিক শিক্ষা দেয়া হয়। পূর্বসূরি বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম ব্যাপক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই কওমি মাদ্রাসার জন্য মানোত্তীর্ণ সিলেবাস প্রণয়ন করেছেন। তিনি বলেন, কোরআন-হাদিস ও ইসলামী জ্ঞানে পাণ্ডিত্য রাখা একজন বিজ্ঞ আলেম ছাড়া কওমি শিক্ষার মান নিয়ে বাইরের কারও মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা কখনোই যথার্থ হবে না। যেমন মেডিকেল শিক্ষার পদ্ধতি নিয়ে একজন প্রকৌশলী বা আলেমের পর্যালোচনা যথার্থ হওয়ার কথা নয়।

হেফাজত আমীর বলেন, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার নানা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনে সময় এবং পদ্ধতিগত তারতম্য থাকাটা স্বাভাবিক। কোন কোন বিষয়ে সর্বোচ্চ জ্ঞান অর্জন করতে কত বছর সময় লাগবে, সেটা সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিজ্ঞজনরাই গবেষণা করে নির্ধারণ করে থাকেন। সব বিভাগে পৃথক পৃথকভাবে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পাঠদানের সময় তো একরকম হয় না।

তিনি বলেন, যারা কওমি সিলেবাস ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, মূলত তারা ধারাবাহিকভাবে ইসলামী আকিদা-বিশ্বাসের নানা দিক এবং মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অপপ্রচার ও কটূক্তির জন্য আগে থেকেই পরিচিত। তারা অসৎ উদ্দেশ্য থেকেই এসব প্রশ্ন তুলে থাকতে পারেন।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, ভোগবাদী চিন্তা থেকে তারা মনে করেন, শিক্ষাকে হতে হবে টাকা উপার্জনের উপায়। অর্থাৎ, টাকা কামানোই হবে শিক্ষার লক্ষ্য- এ ছাড়া শিক্ষার আর কোনো ভূমিকা থাকতে পারবে না। এমন ভোগবাদী চিন্তা থেকেই তাদের মানসিক, আত্মিক কিংবা প্রজ্ঞার বিকাশ ঘটানোর কারণে তারা ধর্মীয় শিক্ষার বিরুদ্ধে ঘোরতর বিরোধিতা শুরু করে।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G