বেণীপুর গ্রামের জঙ্গিদের লাশ নেবে না স্বজনরা

প্রকাশঃ মে ১২, ২০১৭ সময়ঃ ১০:২১ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

রাজশাহী প্রতিনিধি:

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেণীপুর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযান চলাকালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত পাঁচ জঙ্গির লাশ নিতে চায় না তাদের পরিবার।

পুলিশের এ অভিযানে নিহতরা হলেন, সাজ্জাদ আলী মিষ্টু (৫০), তার স্ত্রী বেলী বেগম (৪৫), ছেলে আল-আমিন (২০) ও মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭)। কিন্তু তাদের কারোরই লাশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন নিহত সাজ্জাদের মা মারজাহান বিবি (৮০)।

গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে উপজেলার বেণীপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলীর বাড়ি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকাল ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের শুরুতেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দেয়াল ধসিয়ে দিতে মাটি দিয়ে তৈরি বাড়িটিতে পানি দিতে শুরু করেন। এ সময় জঙ্গিরা বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে নারীসহ একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন। এ সময়ে ঐ পরিবারের দুই শিশুকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

‘অপারেশন সান ডেভিল’নামের বেণীপুর গ্রামের এ জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ঢাকা থেকে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এলেও আলোক স্বল্পতার কারণে অভিযান শুরু করতে পারেননি। আজ শুক্রবার সকাল থেকে বেণীপুর গ্রামে জঙ্গি আস্তানার আশপাশে থাকা পাঁচজনের লাশ ও বোমা উদ্ধার করার কথা রয়েছে।

মারজাহান বিবি বলেন, মানুষ হিসেবে সবার জন্যই মন কাঁদছে। কিন্তু কোনো দেশবিরোধী সন্তানের লাশ গ্রহণ করবেন না তিনি। মারজাহান বিবি মনে করেন, কেউ খারাপ কাজ করলে তার শাস্তি হয়, তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা তেমন শাস্তিই পেয়েছে।

মারজাহান বিবি জানান, তিনি লাশ নেবেন কি-না সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার কাছে এখনো কিছু জানতে চায়নি। তবে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেবেন, কারো লাশ তিনি নেবেন না।

মারজাহান বিবি বলেন, বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে মাছমারা গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ের সঙ্গে সাজ্জাদের বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকে সাজ্জাদ তার শ্বশুরবাড়ির পাশেই একটি বাড়ি করে থাকত। মাস চারেক আগে শ্বশুরের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হয়। এরপর সাজ্জাদ পরিবার নিয়ে গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিষালবাড়ী মহল্লায় কিছুদিন ভাড়া থাকে। ছেলেকে ভাড়াবাড়িতে থাকতে দেখে মারজাহান বিবিই বেণীপুরে মাঠের ভেতর তাকে পাঁচ কাঠা জমি দেন বাড়ি করতে। মাস দুয়েক আগে বাড়িটির নির্মাণ শেষ হয়। এরপর সাজ্জাদ পরিবার নিয়ে ঐ বাড়িতে উঠে। দুই মাসে মাত্র দুবার ছেলের বাড়ি গেছেন মারজাহান বিবি। কিন্তু সেখানে অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি বলে তিনি দাবি করেন।

মারজাহান বিবি বলেন, সাজ্জাদ আলীর স্ত্রী ও মেয়েরা খুব পর্দানশীল ছিল। তাই মুক্তারের বাড়িও তারা খুব একটা যেত না। বছরে দু-একবার যেত। ছেলের পরিবারটির সঙ্গে তার তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না। এ জন্য তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G