জামিন পেলেন সেলিম ওসমান
নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য (জাপা) সেলিম ওসমান।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরা বেগমের আদালত ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আদালত আগামী ৪ জুলাই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ঐ দিন আদালতে তাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামি সেলিমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী কাজী নজিবুল্লা হিরু ও সিদ্দিকুর রহমান।
এর আগে ১৪ মে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরা আদালতে সেলিম ওসমান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার জামিন শুনানির জন্য আজ ২৩ মে দিন ধার্য করেছিলেন।
সেলিম ওসমান জামিন চাইলে আদালত তাকে বলেন, আপনি এই মামলায় চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত হাইকোর্টের জামিনে রয়েছেন। তাই পিটিশনটি আমরা জামিনের মেয়াদ শেষ হলে ২৩ তারিখে শুনব।
প্রসঙ্গত, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে তারই স্কুলের প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়। ঐ ঘটনার ভিডিওতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসের নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে।
বিষয়টি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হলে ‘লাঞ্ছনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাই কোর্ট এরপর পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয় এবং ঐ কমিটি গত ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।
এরপর ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ ঐ তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র অবিলম্বে ঢাকায় পাঠাতে নির্দেশ দেয়।
হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন নিরপেক্ষ ও বৈষম্য ছাড়া প্রয়োগ করা। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন, সবাই আইনের অধীন। এটি আইনের শাসনের মর্মবাণী। বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ঐ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিচারের স্বার্থে এটি যথাযথ বলে প্রতীয়মান হয়।”
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই