শারমিন আকতার:
রাতে ঘুমোতে যাবার আগে সারা শরীর চুলকাচ্ছে। তখন আপনার মনে হল একটা এলার্জির ওষুধ খেয়ে নিলেইতো হয়। যেই কথা সেই কাজ। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। বিপত্তিটা বাধলো সকালে। বেলা বাড়ছে কিন্তু কোনোভাবেই ঘুম থেকে উঠতে পারছেন না। অনেক ডাকাডাকির পর যা ও উঠলেন; মেজাজ খিটখিটে দেখাচ্ছেন। ঘুম থেকে উঠে কেউ মেজাজ দেখায়? সকাল মানেইতো সতেজতা। তবে আপনি কেন রেগে আছেন? খেয়াল করে দেখলেন, ঘুম থেকে উঠার পর মাথাটা প্রচন্ডভাবে ভারীভারী লাগছে। মনে হচ্ছে, কেউ যেন কয়েক কেজি ওজনের ভারী বন্তু আপনার মাথায় দিয়ে রেখেছে। সাথে ঘুমঘুম ভাব। এমন সময় মেজাজ দেখিয়ে কিছু একটা উল্টাপাল্টা করে দিলেন। ব্যস, হয়ে গেল সকালটা মাটি!
সকালের খাবারটা একরকম শেষ, এবার আরাম করে ঘুমোতে যাবার পায়তাড়া করে বেড়াচ্ছেন। পরক্ষণে মনে হল বেশকিছু কাজ জমে আছে। এখন তবে উপায়? এরপর অনেক কষ্টে আদা-লেবু-রসুনের মিশ্রণে তৈরি টাটকা গরম পানি খেলেন। এবার মনে হল কিছুটা ঘুমঘুম ভাব, মাথা ভারভার ভাব কমে এসেছে। সকালের খাবার শেষ করে আবারও গরম গরম চা। হ্যাঁ, এবার ঘুমঘুম ভাবটা বেশ কিছুটা কমে এসছে। তবুও যে সামান্য রয়ে গেল!
বিভিন্ন কারণে নিয়মিত যারা এ্যালোপেথিক ওষুধ সেবন করছেন; তাদের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ ধরণের নানান বিড়ম্বনার কথা। যার মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমঘুম ভাব অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের কেউ কেউ আবার এসব সাইড এ্যাফেক্টের(পাশ্বপ্রতিক্রিয়া) কারণে বিরক্ত হয়ে ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়ে দিব্যি এখন ভালো আছেন।
কথায় কথায় এ্যালোপেথিক ওষুধ বেছে নেওয়ার প্রবণতা আমাদের প্রায় সবারই আছে। প্রচন্ড মাথাব্যথা করছে; কেউ মাথা ম্যাসাজ করে দেওয়ার নেই। সবাই ব্যস্ত যে যার কাজে। প্রথম প্রথম একথা ভেবে খেতে শুরু করেন ওষুধ। এরপর একটু মাথাব্যথার উদ্রেক হলেই দৌঁড়ে গিয়ে ওষুধ খেয়ে নিলেন। ব্যস, ১০ মিনিটেই মাথাব্যথা শেষ! আসলে মাথাব্যথা শেষ নাকি আপনি নিজেই ধীরেধীরে ভেতর থেকে শেষ হয়ে যাচ্ছেন তার কি কোনো খবর রেখেছেন? এত ব্যস্ততায় সেটাও ভাবার ফুসরত নেই!
এভাবে কথায় কথায় যেকোনো এ্যালোপেথিক ওষুধ খাওয়াটাই আপনার শরীর ধ্বংসের অন্যতম কারণ। আপনি কি তা জানেন? যদি জানেন, তাহলে আজই এ থেকে যোজন যোজন দূরে সরে আসুন। নিজেকে প্রকৃতির কাছে বিলিয়ে দিন। সমাধান হাতেহাতে না পেলেও দীর্ঘ সুস্থ জীবনতো পাবেন। এটুকু কি যথেষ্ট নয়? যতদিন বেঁচে আছেন সুস্থভাবে বাঁচুন। প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকুন। কারণ এই প্রকৃতিই আপনাকে ভেতর থেকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা যোগাবে; ভেতরের কলকব্জাকে কুঁড়েকুঁড়ে খেয়ে ফেলবে না। দিনশেষে জটিল রোগে আছড়ে ফেলবে না। আলো-আঁধারী রুমে জটিল অস্ত্রপ্রচারের ফাঁদে জড়াবে না।
’প্রকৃতিই মানুষের প্রথম ও শেষ ভরসা’। এ কথাটি যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই মঙ্গল।