মিরসরাইয়ের দূর্গম পাহাড়ে সুরঙ্গের সন্ধান

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭ সময়ঃ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে একটি রহস্যজনক সুরঙ্গের সন্ধান মিলেছে। সময় যতই গড়াচ্ছে ততই এই সুরঙ্গ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ঘনীভূত হচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ের করের হাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের ঢুল্লাছড়ি এলাকার দূর্গম পাহাড়ে। আর এই সুড়ঙ্গটির সন্ধান মিলেছে সন্ধান পাওয়া এ সুড়ঙ্গটি দেখতে ভিড় করছে শত শত উৎসুক জনতা।

প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ সুরঙ্গ নির্জন পাহাড়ের বিশেষ কায়দায় খনন করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রচুর জঙ্গলে ভরপুর ছিল অলিনগর বনবিটের আওতায় থাকা ঢুল্লাছড়ির ওই পাহাড়। পাহাড়ের জঙ্গল পরিস্কার করে সেখানে গাছ রোপন করার জন্য বন বিভাগকে সরকারীভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বনায়নের জন্য পরিস্কারের কাজ শুরু করে বনবিভাগ। এরপর জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মনজুর আলমের চোখে পড়ে সুড়ঙ্গটি। সে ফিরে এসে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানায়। মনজুর পুনরায় বন্ধু ও এলাকাবাসীকে নিয়ে সেখানে যায়।
এলাকাবাসীরা সুরঙ্গটি দেখে তাৎক্ষনিক বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকে। আর এ সুড়ঙ্গের ছবিও কেউ একজন ফেইসবুকে দিলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। স্থানীয় সাংবাদিকসহ দূর দূরান্ত থেকে আসতে থাকে শত শত মানুষ। ভিড় করতে থাকে সুরঙ্গের আশপাশে।

স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন প্রিয়.কম-কে জানান, সুড়ঙ্গটির দূরত্ব অনেক। সেখানে আরো দুটি সুড়ঙ্গ রয়েছে। মাঝখানে মাটি দিয়ে প্রাচীর দেওয়া হয়েছে। ওই মাঠি সরানো গেলে সুড়ঙ্গটির শেষ দেখা যাবে। সুড়ঙ্গটির ভিতরে কিছুদূর গেলে কয়েকজন বসে কথা বলারও প্রসস্ত জায়গা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতরে দু’পাশে এমনভাবে মাটি কাটা হয়েছে মনে হয় ধারালো খন্তা (মাটির কাটার যন্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া মাটিতে বালি ও কয়লা দেখা গেছে। সুড়ঙ্গটি কমপক্ষে ৫০ ফুট হবে। তারপর আরও দুটি সুড়ঙ্গ রয়েছে।

সুড়ঙ্গের ভেতর ঘুরে আসা নেছার আহমদ বলেন, ‘সুড়ঙ্গের ভেতর আরো দু’টি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। আমি সুড়ঙ্গে প্রবেশের সময় প্রায় ৮০ হাতের একটি পাহাড়ি লতা নিয়ে যাই। ৭০ হাত পর্যন্ত যাওয়ার পর আর ভেতরে যেতে পারিনি। ওখানে সুড়ঙ্গের মুখে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। মাটিগুলো সরানো গেলে আরো ভেতরে যাওয়া সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতর অনায়াশে দু’জন হামাগুড়ি দিয়ে যেতে পারবে। সুড়ঙ্গের মুখ দিয়ে ১০-১৫ হাত ভেতরে যাওয়ার পর দু’পাশে আরো দুইটি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। সুড়ঙ্গের ভেতর ১০-১২ হাত পরপর ৪-৫ জন বসে কথা বলার মতো প্রসস্ত জায়গা আছে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকালে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ও সরকারের দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই, ডিজিএফআই) কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। যোগাযোগ করা হলে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির প্রিয়.কম-কে জানান, বিষয়টি জানার পর আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ওসি আরও বলেন, একটি সুড়ঙ্গ দেখেছি। ধারণা করা হচ্ছে, আগেকার কোন প্রাণীর বাসস্থান ছিল। তাদের আবাস গড়তে গর্ত তৈরী করেছে। এর পরও আমরা কাউকে দিয়ে ভিতরে আছে দেখবো।সুড়ঙ্গটি দেখতে কিছুটা গোলাকৃতির। এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা আপাতত ঐ সুড়ঙ্গের মুখ মাঠি দিয়ে বন্ধ করে রেখেছি।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G