জনি হত্যার ৪ বছর: আতঙ্কে দিন কাটছে পরিবারের

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮ সময়ঃ ১০:২৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৩৪ অপরাহ্ণ

নিহত জনি

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে দায়ের করা মামলাগুলো ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। তবে ৪ বছরেও শেষ হয়নি গাড়ি চালক জনি হত্যার ঘটনায় মিরপুর থানার এসআই জাহিদ ও পল্লবী থানার ২ এএসআইসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি।

দিকে, নিহত জনির পরিবারের অভিযোগ, মামলা তুলে নিতে জামিন পাওয়া আসামিরা বিভিন্ন সময় টাকার প্রলোভন ও ভয়-ভীতি দেখানোয় আতঙ্কে আছেন তারা।  
২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর মিরপুরের ইরানী ক্যাম্প এলাকায় একটি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমনের সাথে কথা কাটাকাটি হয় বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক জনির। সেই রাতেই তৎকালীন পল্লবী থানার এসআই জাহিদসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য জনিকে থানা হেফাজতে নিয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে প্রাণ হারান জনি।

এ ঘটনায় এসআই জাহিদ ও ২ এএসআই সহ ৫জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন জনির ছোট ভাই রকি। মামলাটির বিচার কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। তবে, মোট ১৫ জনের সাক্ষীর মধ্যে আড়াই বছরে সাক্ষ্যগ্রহণ হয় মাত্র ২জনের।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুল হক শিহাব বলেন, ‘আমরা যখন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করি, এবং আদালতে সাক্ষী আসে, বিবাদী পক্ষ থেকে চেষ্টা করে মামলাটা বিলম্বিত করার জন্য।’

আসামী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিলম্বিত করছি না। মাত্র দুজন সাক্ষী এনেছেন উনারা এই সড়ে তিন বছরে। এটা প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা। তারা সাক্ষী আনতে পারে নাই।’       

জনির পরিবারের সদস্যরা

মামলার প্রধান আসামি এসআই জাহিদ কারাগারে থাকলেও উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায় বাকি আসামিরা। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন সময় বাদীর বাসায় এসে হুমকি দেয়াসহ মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখায় দুই এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টু। 

নিহত নির ছোটভাই রকি জানান, ‘আমরা খুবই দুঃখে জীবনযাপন করছি, খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমার চোখের সামনে আমার ভাইকে মারা হয়েছে। আমি এতে আপসে কোনোভাবেই যাব না।’ 

জনির মা বলেন, ‘এখনও মনে পরে সেই দৃশ্য টা। কিন্তু এখনও বিচার পাচ্ছি না আমি।’ 

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এর শাস্তি দাবি করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।

ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিযাস উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘পুলিশ বানিয়ে মানুষ হত্যার কোনো টেন্ডার তাদের দেয়া হয় নাই। হুমকি দিছ্ছে, সেই হুমকি তো কোনো কাজে আসবে না। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’ 

মামলা তুলে নিতে জামিন পাওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক বাদীকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছেন নিহত জনির পরিবার।

এআইজি সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘এসআই জাহিদ যেহেতু এখনও ট্রায়াল পর্যায়ে আছেন, যদি কনভিকশন হয়, তখন সে অটোমেটিকালি চাকরিচ্যুত হবে। সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী।’    

জনি হত্যা ছাড়াও মিরপুরের ঝুট ব্যবসায়ী সুজন হত্যাসহ অনেককে থানায় এনে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে । 

প্রতিক্ষণ/এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G