আগামীকাল প্রথম ভোট দিচ্ছে কুড়িগ্রামের ছিটমহল বাসিন্দারা
সুজন মোহন্ত :
দীর্ঘ সাত দশক পর নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পাওয়া কুড়িগ্রামের ১১টি ছিটমহলের প্রাপ্তবয়স্করা জীবনের প্রথম সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেত যাচ্ছেন। এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা যেমন আছে, তেমনি আছে তাদের নানা প্রত্যাশা।
জানা যায়, দীর্ঘ ৬৮ বছরের বঞ্চনার পর ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট মধ্যরাত বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় হয়। এতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পঞ্চগড় জলার ১১১টি ছিটমহলের ৩৭ হাজার ২৬৯ জন। এসব ছিটমহলে ভোটার তালিকায় অঅন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রায় ২২ হাজার মানুষ। এর মধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ সাবেক ছিটমহল কুড়িগ্রামের দাসিয়ার ছড়ায় ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১৭২ জন। আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন সাবেক ছিটমহলের এ ভোটাররা।
দীর্ঘ বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে নাগরিক মর্যাদা দেয়ার জন্য বর্তমান সরকারর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, বিলুপ্ত এসব ছিটমহলের বাসিন্দারা। ফলে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ ভোট মহাজোটের বাক্সই যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেও তেমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিলুপ্ত ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে কুড়িগ্রামে পড়েছে ১২টি। এখানেই রয়েছে বৃহত্তম ছিটমহল দাসিয়ার ছড়া। এখানে মোট ভোটার ৩ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে অর্ধকেই নারী। ফুলবাড়ী উপজেলার এ ছিটমহল কুড়িগ্রাম-২ আসনের মধ্যে। ২০১৫ সাল ছিটমহল বিনিময়ের পর এখানে রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক অবকাঠামার উন্নয়ন হয়েছে।
আসনটিতে আটজন প্রার্থীর মধ্যে মহাজোটের পনির উদ্দিন আহমদ (লাঙল) ও জাতীয় ঐক্যফ্রট থেকে গণফোরাম নেতা আমসা আমিনের (ধানের শীষ) মধ্যেই মূলত প্রতিদ্বন্ডিতা হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় মহাজোট প্রার্থী উন্নয়ন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে বাংলাদশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সময় কমিটির (বাংলাদশ অংশের) সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেছেন, তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। দাসিয়ার ছড়াকে ইউনিয়ন ঘোষণার দাবিও তাদের। পাশাপাশি এখানকার বেকার সমস্যাও অগ্রাধিকার ভিত্তিত দেখতে হবে বলে জানান তিনি। কুড়িগ্রামের বাকি ১১টি ছিটমহল ভুরুঙ্গামারী উপজেলার কুড়িগ্রাম-১ আসনে পড়েছে। এখানে ভোটার সংখ্যা খুবই কম ।একাধিক বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদর যা কিছু সব হাসিনার সরকারেই দিয়েছে। সেই কৃতজ্ঞতা থেকেই তারা মহাজোটের প্রার্থীকে ভোট দিতে চান। আর বাংলাদশের নাগরিক হিসেবে এবারেই তারা প্রথম ভোট দিতে পারছেন। তারা এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।