ইনডোর গেইমে ব্যস্ত রাখুন আপনার সন্তানকে

প্রকাশঃ মে ২৮, ২০২১ সময়ঃ ১১:০২ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

করোনার জন্য এক বছরের বেশি সময় স্কুল-কলেজ বন্ধ। মাঝখানে সংক্রমণ কিছুটা কমতে থাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছিল সাধারণ মানুষ। লকডাউন তুলে নেওয়ায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল অনেকের মধ্যেই। করোনার সংক্রমণ বাড়ায় আবার ফিরতে হয়েছে বন্দি জীবনে। এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি সংকটের শিকার শিশুরা। মানসিক, শারীরিক দুদিক থেকেই। স্কুল-কলেজ তো বন্ধই, তার ওপর ঘরের বাইরে বেরোতে না পারলে শিশুর মনোজগতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ জন্য শিশুকে ঘরে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখা উচিত, বিশেষ করে দিনের বড় একটি অংশ ঘরোয়া মজার খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখতে পারলে ভালো।

পিঠাপিঠি ভাই-বোন থাকলে তো কথাই নেই। না হলেও ক্ষতি নেই। শিশুর বয়স ও বুদ্ধি অনুযায়ী ওকে প্রিয় খেলার একটি তালিকা করতে বলুন। কোন খেলা বেশি প্রিয় এবং খেলার সঙ্গী বিবেচনায় তালিকা করতে ওকে সাহায্য করতে পারেন। এখন মা-বাবাকেও বেশির ভাগ সময় বাসায়ই কাটাতে হচ্ছে। এই সময়টা একা একা না কাটিয়ে শিশুর সঙ্গে কাটান।

স্মার্টফোন অথবা টেলিভিশনের পর্দায় নয়, শিশুর সঙ্গে ঘরোয়া খেলায় মাতুন। এতে সবারই সময়টা যেমন আনন্দে কাটবে, তেমনি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বন্ধনটাও অটুট হবে। সন্তান যদি বড় হয়, তবে ওকে সঙ্গে নিয়ে লুডু খেলতে পারেন। সন্তানের বয়স বিবেচনায় ওকে দাবার চাল শেখাতে পারেন। এরপর বিকেলে বারান্দায় বাপ-বেটা/বেটি মিলে বসে যান দাবার চাল চালতে। সময়টা খারাপ কাটবে না।

লকডাউনের শুরুর দিকে সন্তানের সময় কাটানো নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়েছিলেনেউত্তর বাড্ডার রাকিব হাসান। একমাত্র সন্তান আনাস নিয়ে দীর্ঘ সময় ঘরে কাটাতে গিয়ে নতুন সব উপায় আবিষ্কার করেছিলেন। প্রথম দিকে নিজেই হতেন বোলার, ছেলে ব্যাটসম্যান। পরে টেলিভিশনে ক্রিকেট খেলার বিজ্ঞাপন থেকে আইডিয়া নিয়ে বারান্দার সিলিংয়ে বল বেঁধে ঝুলিয়ে দিলেন। এরপর একা একাই ক্রিকেট খেলত আনাস। তিনি জানান এবার লকডাউনেও শিশুকে লুডু, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ, দোলনায় দোল খাওয়া, প্লাস্টিকের কাঠামো দিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা বানানো এবং ছাদে ঘুড়ি ওড়ানোর মতো খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখছেন। ঘরের বারান্দায় কিংবা ডাইনিং টেবিলকে ঘিরে টেবিল টেনিসের কোর্ট বানিয়ে দিন, যাতে সে প্রতিদিন ঘণ্টাখানেক এখানে টেবিল টেনিস খেলতে পারে। দড়ি লাফ শিশুদের জন্য খুব মজার একটি খেলা। এই খেলায় আনন্দের পাশাপাশি শিশুদের শরীরচর্চার কাজটিও খুব ভালোভাবে হয়ে যায়।

বিকেলে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলে ক্যারম খেলতে পারেন। সন্তান যদি একের অধিক হয়, তবে ওদেরকেই খেলতে বলুন। একা একা খেলার জন্য শিশুকে ডার্ট বোর্ড কিনে দিতে পারেন। এতে ওদের সময়টা ভালো কাটবে। মাঝেমধ্যে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে লুকোচুরি খেলতে পারেন। মজা পাবে এতে। শিশুকে আরো বৈচিত্র্যময় খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখতে চাইলে ইউটিউবে ঢু মারতে পারেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিশুদের ঘরোয়া খেলাধুলার অভিনব সব টিউটরিয়াল পেয়ে যাবেন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শিশুরা খেলাধুলার সময় ভালো সান্নিধ্য পায়। এতে বড়দের মনোভাব বুঝতে সুবিধা হয় শিশুদের। একসঙ্গে মিলেমিশে খেলাধুলার ফলে দলবদ্ধভাবে কাজ করার, পারস্পরিক বোঝাপড়ার ব্যাপার সহজ হয়। এগুলো শিশুর মনে গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। লকডাউনে তাই স্মার্টফোন ও টেলিভিশনে শিশুকে ব্যস্ত না রেখে কিছু ঘরোয়া খেলায় অভ্যস্ত করুন।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G