লটকনের যত গুণ

প্রকাশঃ জুলাই ৬, ২০২১ সময়ঃ ৭:১৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:১৪ অপরাহ্ণ

লটকন খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে নিস্তার পাবেন। সেইসঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পারমাণও বাড়বে।যদিও লটকন স্বল্প সময়ের ফল। বর্ষা মৌসুমে এই ফলটি বাজারে সহজলভ্য হয়ে ওঠে। এখন রাস্তাঘাটে সব জায়গায় মিলছে এই ফলটি। লটকন এমন সব উপাদানে ঠাসা যাতে কোলন ক্যান্সারসহ নানা জটিল ও কঠিন অসুখ সারাতে সাহায্য করে। তাই এ সময় সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে লটকন খেতে পারেন।

পুষ্টিবিদদের মতে, লটকনে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। ছোট বড় সবাই এই ফলটি খেতে পারেন। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আছে লটকনে। চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকন খেলে সারবে কোন কোন রোগ-

১. টকনে আছে ভিটামিন সি। যা ত্বক, দাঁত ও হাড় সুস্থ রাখে। লটকনে ভিটামিন সি বেশি থাকায় দিনে ২-৩ খেলেই আপনার দৈনিক ভিটামিন সি’র সার্বিক চাহিদা পূরণ হবে।

২. এই ফলে নানা রকম খনিজ উপাদান আছে। যেমন- পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম উল্লেখযোগ্য। এসব উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রোমিয়াম থাকে।

৩. ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল লটকন। লটকনে ভিটামিন বি-১ এর পরিমাণ হল ১০.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি-২ আছে ০.২০ মিলিগ্রাম। বেরিবেরি রোগ থেকে দূরে রাখে লটকন।

৪. এ ছাড়াও শারীরিক দূর্বলতা, বুক ধড়ফড় করা, হাত-পায়ে ব্যথা, ঠোঁট এবং পায়ের তালু ফাটা, ঠোঁট ও মুখের ঘা এবং বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় যারা ভুগছেন লটকন তাদের জন্য আদর্শ একটি পথ্য।

৫. রক্ত ও হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারী লটকন। কারণ এতে থাকে আয়রন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৫.৩৪ মি.গ্রা আয়রন থাকে।

৬. লটকনে থাকা উপাদানসমূহ কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা।

৭. খাদ্যশক্তির ভালো উৎস লটকন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। যা কাঁঠালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

৮. লটকনে আরও আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম। যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৯. এ ছাড়াও লটকনে কিছু পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে।

১০. নিয়মিত লটকন খেলে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন চর্মরোগ থেকেও রক্ষা পাবেন। কারণ লটকন একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এতে ভিটামিন সি থাকায় চর্মরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

১১. বমি বমিভাব দূর করতে পারে লটকনে থাকা পুষ্টিগুণ। পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে লটকন।

১২. এ ছাড়াও গরমে তৃষ্ণা মিটাতেও সক্ষম লটকন। কারণ এতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি। এমনকি ডিহাইড্রেশন কাটিয়ে উঠতেও লটকন সাহায্য করে।

১৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে লটকন। কারণ এই ফলের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি নেই। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এই ফলল খেয়ে।

১৪. ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতাও ওষুধি কাজ করে। এর পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানারকমের অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।

১৫. লটকনের বীজ গনোরিয়া রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। ডায়ারিয়া দূর করতে লটকনের পাতার গুঁড়ো কার্যকরী।

১৬.লটকনের নানারকম গুণ থাকার পরও একবারে বেশি লটকন না খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। কারণ এতে করে অনেক সময় ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।

সূত্র: হেলথ বেনিফিটস টাইমস

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G