প্রসূতি মায়েরাও টিকা পাবে

প্রকাশঃ আগস্ট ১, ২০২১ সময়ঃ ৪:৩৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩৯ অপরাহ্ণ

দেশে প্রসূতি ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা দেওয়া নিয়ে সংশয় ও বিভ্রান্তি চলছিল। সরকারের দিক থেকেও ছিল না কোনো নির্দেশনা। প্রসূতি বিশেষজ্ঞরা কিছুদিন ধরেই প্রসূতিদের করোনার টিকা দেওয়ার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন, পাশাপাশি প্রসূতিদের উৎসাহ জোগাচ্ছিলেন। কিন্তু সরকারের নির্দেশনার অভাবে এতে তেমন কোনো সাড়া ছিল না। যদিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত দেড় বছরে অনেক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ সম্প্রতি একজন প্রসূতি চিকিৎসক ও একজন প্রসূতি বিচারকের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর প্রসূতিদের টিকার বিষয়টি আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। বিষয়টি আদালতেও গড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অবশেষে দেশে গর্ভবতীদের করোনার টিকা দিতে সম্মতি দিয়েছে টিকাবিষয়ক সর্বোচ্চ পরামর্শক কমিটি বা ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন অ্যাডভাইজারি গ্রুপ-নাইটেগ। গতকাল কমিটির এক বৈঠকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আজ-কালের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে জানানো হবে। এরপর সরকার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করবে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে গর্ভবতী এবং সন্তানকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে অধিকতর সতর্কতার কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গ্রুপ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। তবে সম্প্রতি কয়েকটি দেশে গবেষণায় ইতিবাচক ফল পাওয়ায় ডাব্লিউএইচও এবং অন্যরা কিছু শর্তসাপেক্ষে এতে সায় দেয়। এ ক্ষেত্রে বলা হয়, গর্ভবতীতে টিকা দেওয়ার আগে তাকে টিকার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত করতে হবে। তিনি সম্মতি দিলেই কেবল তাকে টিকা দেওয়া হবে।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার, অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মোজ্জাম্মেল হক জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে রাশিদা চৌধুরী নিজেই অন্তঃসত্ত্বা। আবেদনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআরের পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গত ২৯ জুলাই সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এই নোটিশ দেন।

গতকালের রিট আবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা টিকা দেওয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকা নেওয়া অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বরং গবেষণার তথ্যানুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G