সাংবাদিক হত্যা : বিশ্বজুড়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানের খবর সংগ্রহের সময় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরীন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এ ঘটনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্ব। তাছাড়া যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড শিরীন আবু আকলেহের হত্যাকাণ্ডকে ভয়ঙ্কর উল্লেখ করে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও সাংবাদিকেদের রক্ষা করা আমাদের প্রধান কাজ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছেন, সাংবাদিক শিরীন আবু আকলেহকে হত্যার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। পাশাপাশি এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি। এক টুইট বার্তায় তিনি আরও বলেন, শিগগিরই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এদিকে হোয়াইট হাউজ থেকেও তদন্তের দাবি করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র লুইস মিগুয়েল বুয়েনো বলেছেন, দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদকিকে হত্যার ঘটনায় তিনি মর্মাহত।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, এ হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের ভয়াবহ দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠেছে। এভাবেই ডানে-বাঁমে নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল-থানি আল-জাজিরার নিহত সাংবাদিকের পরিবার ও তার সহকর্মীদের সমবেদনা জানিয়েছেন।
থানি বলেন, নিরস্ত্র ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর যারা ভয়াবহ হামলা চালায় তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
এক বিবৃতিতে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনিরে সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানান।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হত্যার নিন্দিা জানিয়েছে। বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।
এদিকে ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত এক টুইট বার্তায় বলেছেন, সাংবাদিকদের অবশ্যই স্বাধীন ও নিরাপদে কাজ করতে দিতে হবে। তাছাড়া এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান তিনি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকের ওপর চালানো সহিংস ঘটনায় আমরা হতভম্ব। আইন অনুযায়ী, এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইদ খাতিবজাদেহ ফিলিস্তিনির সাংবাদিককে হত্যার কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল গণমাধ্যমের কণ্ঠ বন্ধ করতে চায়। কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বেলজিয়াম, ইউম্যান রাইটস ওয়াচ, রিপোটার্স উইথ আউট বর্ডারস, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট ও ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্ট।
১৯৭১ সালে জেরুজালেমে জন্মগ্রহণ করেন এই খ্যাতিমান সাংবাদিক। তিনি ছিলেন একজন খ্রিষ্টান ও মার্কিন নাগরিক। জর্ডানের ইয়ারমুক ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতায় যাওয়ার আগে প্রাথমিকভাবে আর্কিটেকচারে পড়াশোনা করেন। স্নাতক শেষ করে তিনি ফিলিস্তিনে ফিরে আসেন ও কিছু গণমাধ্যমে কাজ করেন। আল-জাজিরার যাত্রা শুরুর এক বছর পর তিনি এর সঙ্গে যুক্ত হন।
প্রতিক্ষণ /এডি/রন