জহির ভূইয়া
রবিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। ২৩ অক্টোবরের ক্রিকেটীয় যুদ্ধের আগেই গরম বাতাস মাঠের বাইরে বইতে শুরু করেছে। এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিলে কার্যত এখন ভাঙ্গনের দরজায় গড়া নাড়ছে। চলতি বিশ্বকাপ আসরেই ভারতকে বয়টকের কথা ভাবছেন কামরান আকমল!
যার সূত্রপাত হয়েছে জয় শাহের মন্তব্যে। এমন মন্তব্য করেছে কলকাতার প্রথম সারির অন লাইন পত্রিকা আনন্দবাজার। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে ভারত ২০২৩ সালে এশিয়া কাপে অংশ নিতে পাকিস্তান যাবে না, এমন ঘোষণার পর পাকিস্তান ক্রিকেট প্রধান রজিম রাজা ঘোষণা দিলেন ২০২৩ সালের একদিনের বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তানও ভারতে যাবে না। সঙ্গে পাক শিবির থেকে ঘোষণা এসেছে পাকিস্তান এসিসি থেকে নিজেদের সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেবে। পরিস্থিত ঘোলাটে হয়ে গেছে, কারণ এখন ২০০৯ সালে লঙ্কান ক্রিকেট দলের উপর হামলার মতো পরিস্থিতি নেই। ইংল্যান্ডের মতো উপরের সারির দল পাকিস্তান সফর করে গেছে। তাই এখন আর পাকিস্তান ক্রিকেট কর্তারা ভারতকে ছেড়ে কথা বলবে না এটাই স্বাভাবিক।
মুলত দুই দিন আগে, ‘এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে যাবে না ভারত’, জয়ের এই মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখছে না পাকিস্তান। পাক বোর্ড প্রধান রামিজ় রাজার তরফে বিসিসিআইয়ের কাছে এই বিষয়ে বিবৃতি দাবি করা হয়েছে।
এমনকি ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কট করার দাবিও তুলছেন পাকিস্তানের একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটার। আফ্রিদির মতো তারকা জয়ের মন্তব্যের বিরোধিতা করে টুইট করেছেন। আরও একধাপ এগিয়ে চলতি বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কট করার কথা বলেছেন কামরান আকমলের মতো তারকা ক্রিকেটার।
সত্যি যদি কামরান আকমলের মতো আরো একাধিক পাকিস্তানী ক্রিকেটার ২৩ অক্টোবর টি২০ বিশ্বকাপের আসরে ম্যাচ বয়কটের ঘোষণা দিয়ে বসে তাহলে ভাঙ্গন আর মুখোমুখি পরিস্থিতি ২০২৩ সালের অপেক্ষায় থাকবে না। ২০২২ সালেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাক-ভারত মুখোমুখি অবস্থায় চলে যাবে।
বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেট কর্তারা এক তরফা ভাবে পাকিস্তানে খেলা প্রসঙ্গে বয়কট করে আসছে। কিন্তু ২০২৩ সালের আগেই পাকিস্তান ক্রিকেটে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। তাই এখন আর আগের সেই দিন নেই যে, ভারত যা ইচ্ছে বলবে আর তাই হয়ে যাবে।
একটা বিষয় পরিস্কার, ভারত ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে না গেলে ২০২৩ অক্টোবরে আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তানও ভারতে যাবে না। এবং এসিসি থেকে নিজেরর নাম প্রত্যাহার করে নেবে। তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেট ভিত্তি বলে কিছু থাকবে না।
ভারত বা পাকিস্তান কোন দলকে ছাড়াই এশিয়া কাপ সম্ভব না। যদি সম্ভব হয়ও, তাহলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না আর আর্থিক ভাবে হবে এসিসি ক্ষতিগ্রস্থ। দক্ষিণ এশিয়ান ক্রিকেটে সম্পর্ক বলতে যা এখনও অবশিষ্ট আছে সেটাও থাকবে না। এটা এ অঞ্চলের ক্রিকেট ভক্তদের কারও কাছেই প্রত্যাশিত না। এটা ভারতীয় কর্তারা বুঝেও কেন না বোঝার ভান করছেন, সেটা তারাই ভাল বলতে পারবেন।