আজ বিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১, ২০১৫ সময়ঃ ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

bnp 37

উত্থান ও পতনের মধ্য দিয়ে আজ (১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।

দলটির মুখপাত্র আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এসব কর্মসূচির বেশিরভাগই পালিত হবে ঘরোয়া আয়োজনে। অতীতে বর্ণাঢ‌্য আয়োজনে নিজেদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করলেও এবার কিছুটা ব্যতিক্রম থাকছে কর্মসূচিতে।

সরকারের আক্রমণাত্মক মনোভাবের কারণে মন ভরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে আনন্দ উল্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপেদষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেছেন, দেশে বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্বল্প পরিসরে আয়োজন সেটারই বহিঃপ্রকাশ। যেখানে গণতন্ত্র অনুপস্থিত থাকে সেখানে স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয় না।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান মনে করেন, সময়ের বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে অনেক কিছু করতে হয়। সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের কারণে দেশের কোথাও কোনো কর্মসূচি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, কঠিন এই বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যতোটুকু করা যায় তারা তা করবেন। আলেচনা সভা, জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধাসহ নানা কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে আছেন, এই সময়ে বিএনপির সফলতা কী জানতে চাইলে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য ও উপদেষ্টা বলেন, সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এটাই বিএনপির সফলতা। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর নির্বাচনে জিতে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতার দেখা পেয়েছিল দলটি। এক হিসেবে দেখা যায়, এখন এই দলটিই টানা প্রায় আট বছর ক্ষমতার বাইরে আছে। এর মাঝে দলটিতে অনেক উত্থান পতনের ঘটনাও ঘটেছে।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ তৎকালীন ১৮-দলীয় জোট নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনে নামে। নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে দলটির ভেতরে এখন প্রায় কঙ্গালসার অবস্থা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের এক পটভূমিতে ৭ নভেম্বর ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন জিয়াউর রহমান। প্রথমে তিনি ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপিতে রূপান্তরিত হয়।

এরপর ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হলে দলটি প্রথমবারের মতো নেতৃত্বের সংকটে পড়ে। দলের সেই সঙ্কটকালে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন খালেদা জিয়া।

পরবর্তীতে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপসহীন ভূমিকা দলটিকে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে। এরপর ২০০১ সালে আবারো ক্ষমতায় আসে দলটি।

দেশের বৃহত্তর এই রাজনৈতিক শক্তির ৩৭ বছরের উত্থান-পতনের ইতিহাসে প্রায় ৩৩ বছর ধরে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।তাকে আপোসহীন নেত্রী বলে দাবি করেন দলটির নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার ঢাকায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শেরেবাংলা নগরস্থ জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

এছাড়া বিকেল ৩টায় কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট কাউন্সিল হলে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া থাকবে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।

দলটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন এবং যথাসময়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G