আজব বিবাহ কাহিনী

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ৯, ২০১৫ সময়ঃ ৯:১৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:১৩ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

africa 2এই বিশ্ব সংসারে জাতী,ধর্ম,বর্ণ বিচারে বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবন ধারনের পন্থা আলাদা রকমের। কিন্তু মৌলিক কিছু বিষয়ে সকলকে এক পাল্লায় মাপা যায়।তার মধ্যে বিয়ে হলো তেমনই একটি বিষয়। একজন পুরুষের সাথে একজন নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা আমরা সকলেই জানি।পৃথিবীর সব দেশেই এমন রীতি প্রচলিত তাও নতুন কিছু নয়।

মুসলমান,হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান একেক ধর্মে বিয়ের নিয়ম-কানুন একেক রকম এও কারো অজানা নয়।এখন নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে তাহলে অজানা কি?বিয়ে তো বিয়েই!ঠিক তাই বিয়ে তো বিয়েই কিন্তু এমন কিছু দেশ বা গোষ্ঠী আছে যাদের বিয়ের রীতি-নীতির সাথে আমরা কখনও পরিচিত নয়। এমন কিছু স্বল্প সময়ের বিয়ে নিয়ে আজকের আয়োজন।

মধ্য আমেরিকার ক্ষুদ্র রাষ্ট্র পানামার ‘সান ব্লাস’ উপজাতীয় গোত্রের বিয়ের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দুটি গাছে একটা শক্ত কাপড়ের দুই মাথা দুই গাছে সাথে বাঁধা হয়, বর গিয়ে সেই ঝুলন্ত কাপড়ে শুয়ে পড়ে। এরপর সাজিয়ে-গুজিয়ে কনেকে বরের পাশে বসিয়ে দেওয়া হয়। তারপর এক মিনিট বর-কনে সেই কাপড়ে বসে থাকলেই দুজনের বিয়ে হয়ে যায় এবং তারা স্বামী-স্ত্রীতে পরিণত হয়।

ফ্রিফার পূর্ব-মধ্যাংশের রাষ্ট্র রুয়ান্ডাতে ‘ওয়াটুসি’নামের গোত্রের মধ্যে বিয়ের রীতি বেশ অদ্ভুত। বর-কনে সকলের উপস্থিতিতে সামনা-সামনি দাঁড়ায়। বর মুখ থেকে কুলি করে কনের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়, কনেও মুখের পানি বরের গায়ে ছিটিয়ে দেয়, এরপর তাদের বিয়ে হয়ে যায়।

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের গঞ্জাম জেলায় বসবাসকারী ‘সুন্দ্রা’ গোত্রের মেয়েদের বয়স বারো বছmarrigeর পূর্ণ হলে তাকে প্রথমে সূর্যের সাথে বিয়ে দিতে হয়। ওই বিয়ের দিন পুরোপুরি বিয়ের আয়োজন করে, মেয়েটিকে গয়না গাটি পরিয়ে কনে সাজানো হয়। তারপর একটি থালায়  পানি রেখে কনেকে থালার পাশে রাখা হয়, তাতে বর সূর্যের প্রতিফলন পড়ে, এই প্রতিফলন পড়ার সাথে সাথে সূর্যের সঙ্গে কনের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর থেকে মেয়েটিকে ঠিক বিবাহিতা মেয়ের মতো বিবেচনা করা হয়।

ফারমোজা বা তাইওয়ানে একটি গোত্র আছে, যাদের মধ্যে আরেক অদ্ভুত বিবাহ রীতি প্রচলিত। বর বিয়ের বেশ কিছুদিন আগে থেকে গাছের গায়ে লাথি মারার অভ্যাস করতে থাকে। বিয়ের দিন বর কনের হাঁটুর নিচে কায়দা করে লাথি মারে, তাঁর পা কনের পায়ের সঙ্গে লাগা মাত্রই তাদের বিয়ে হয়ে যায়।

আফ্রিকার রুয়ান্ডাতে অন্য আরেকটি সম্প্রদায়ের বর-কনের যে বিয়ের রীতি আরও বেশি অদ্ভুত।ওই গোত্রে বিয়ের অর্থ কনের মুখে চুন মাখিয়ে দেয়া। বিয়ের দিন বর নিজ হাতে কনের মুখ চুনকাম করে সাদা করে দেয়। তারপর তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে।

কাশ্মীরের হিন্দুদের মধ্যে যে বিয়ে হয় সেই বিয়ের আসরে কনে নিজে উপস্থিত থাকেনা, বদলে তার একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকে। প্রতিনিধিটি হলো একটি উট। ভারতের কোন কোন জায়গায় এমন রীতি প্রচলিত আছে যে, মেয়ে যদি পছন্দ করে কোন ছেলেকে বিয়ে করতে চায়, তাহলে বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে প্রথমে একটি গাছকে বিয়ে করতে হবে।

আফ্রিকার ইথিওপিয়ার ‘গাল্লাদের’গোত্রের মধ্যে যে বিয়ে হয় তা অনেকটা গুম করার মতো। বর কনেকে বিয়ের আসর থেকে কোলে তুলে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। সেখানে একটা বড় পাত্রে পানি ভরা থাকে। কনেকে তুলে বর পানির উপর ছেড়ে দেয় । তখন পানির আওয়াজ হয়, যতো বেশী জোরে আওয়াজ হবে বিয়ে ততোই বেশী জোড়ালো Afrikanskaya-svad-baহয়েছে বলে বিবেচিত হয়।

ভারতের রাজপুতানার ‘বিকাণিরে’ হিন্দুদের বিয়ে হয় আরেক অদ্ভূত রীতিতে। পুরোহিত কনের হাত একটি গাভীর লেজের সঙ্গে বেঁধে দেন। গাভীকে দেবতা জ্ঞান করা হয়, গাভী কোন এক সময়ে ‘হাম্বা’ বলে ডাক দিলে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। তারপর বর-কনের বিয়ের অন্যান্ন অনুষ্ঠান শুরু হয়।

কঙ্গোতে ওলেম্বা উপজাতির মধ্যে বিবাহের সময় কুকুরেরও প্রয়োজন পড়ে। বিয়েতে বৌয়ের মূল্য ধরা হয় ৮টা তামার ক্রশ, ৩৫টা মোরগ এবং ৪টা কুকুর। কিন্তু একটি মজার ব্যাপার এখানে ভীষণ ভাবে উল্লেখ করা উচিত তা হলো এই জায়গাটায় ঐ কুকুর সংগ্রহ করা খুব শক্ত তাই সম্ভবতঃ কুকুরও উপহার হিসেবে গণ্য করা হয়।

বাহামার চনহাদের মধ্যে বন্দুকের গুলি দিয়ে বিয়ে হয়। পুরোহিত কনের মুখে দুবার গুলি করেন, বন্দুকে যদিও গুলি থাকেনা, ফাঁকা। বন্দুকের আওয়াজ মিলিয়ে গেলে কনে যখন চোখ মেলে তাকায় তখন সে বিবাহিতা এবং সুখী। শ্রীলঙ্কার বিবাহ রীতিও বেশ অদ্ভূত। পুরোহিত বর কনের বুড়ো আঙ্গুলে একটি সুঁতো দিয়ে বেঁধে দেন, তখনই তাদের বিয়ে হয়ে গেলো।

প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G