আট মাস পূর্ণ তনু হত্যাকাণ্ডের
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের আট মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ রোববার।
দীর্ঘ এ সময়ে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পর বর্তমানে সিআইডি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পালন করলেও এ যাবৎ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন তো দূরের কথা, ঘাতকদের শনাক্ত কিংবা মামলার তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
এরই মধ্যে এ মামলার দুজন তদন্ত তদারক কর্মকর্তার বদলি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করা হলেও যেন স্থবির হয়ে আছে তদন্ত কার্যক্রম। তাই একমাত্র মেয়ে তনু হত্যার ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে সংশয় ও চরম হতাশায় রয়েছে তনুর পরিবার।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়ে হারানোর পর প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনাবাহিনীর প্রধান থেকে শুরু করে পুলিশ পর্যন্ত -সবাই ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়ে এলেও দীর্ঘ আট মাস পরও আমার মেয়ের ঘাতকেরা ধরা পড়েনি। এ পর্যন্ত ঘাতকদের ডিএনএ মেলানোর কী হলো- তা আমরা জানতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমরা চাই তনুর প্রকৃত ঘাতকেরা ধরা পড়ুক, শাস্তি পাক, দেশবাসীর দাবিও তাই।
হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আল্লাহ্ আছেন। দুনিয়ায় এ বিচার না পেলেও পরকালে মেয়ের হত্যাকারীদের শাস্তি হবেই।
জানা যায়, কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে গত ২০ মার্চ রাতে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস-সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি পুলিশ ও জেলা ডিবির পর গত ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি-কুমিল্লা। সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজনের শুক্রাণু পাওয়ার কথাও গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল এবং তারা নিশ্চিত হয়েছিল ‘হত্যার আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটি সঠিক ছিল না’।
তবে কোথায়, কেন এবং কীভাবে তনুকে খুন করা হয়েছে- তা নিয়ে এখনো সিআইডিসহ সব মহলে নানা গুঞ্জন চলছে।
এছাড়া আদালতের আদেশে সিআইডি ডিএনএ প্রতিবেদনটি দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডকে সরবরাহ করলেও তিন সদস্যের ওই মেডিকেল বোর্ড তনুর মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট করতে পারেনি।
এদিকে এ মামলার দুজন তদারক কর্মকর্তা সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান ও শাহরিয়ার রহমানের বদলির পর বর্তমানে মামলাটির তদন্ত তদারকি করছেন সিআইডি-কুমিল্লার পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মোশাররফ হোছাইন।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ