আতঙ্কে গ্রিসপ্রবাসী বাংলাদেশিরা

প্রকাশঃ জুলাই ৬, ২০১৫ সময়ঃ ৫:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:০৯ অপরাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

visit-Greeceগ্রিসে ২০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন, তাদের সবার মধ্যে একটা আতঙ্কিত অবস্থা কাজ করছে। গণভোটের পর দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা। এরই মধ্যে চরম আর্থিক সংকটের কারনে গ্রিস ছাড়তে শুরু করেছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশিরাও যে যেভাবে পারছেন পার্শ্ববর্তী ইতালি, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে ব্যাংক লেনদেন এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার ঘোষণার পর জীবনব্যয় নির্বাহের জন্য জমিয়ে রাখা অর্থ শেষ হলে না খেয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গ্রিসের কারখানায় প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি কাজ করেন। বাংলাদেশিরা চালান, এমন ২৫০টি কারখানা রয়েছে গ্রিসে, যার মধ্যে অধিকাংশই পোশাক কারখানা। আর যে কারণে গ্রিস সংকটে তাৎক্ষণিকভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। অনেকে হয়তো দেশেই ফিরে আসতে হতে পারে- এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া গ্রিস-সংকটে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়েও প্রভাব পড়বে। সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে বেকার হয়ে পড়বেন শ্রমিক এবং বন্ধ হয়ে যাবে কারখানাগুলো। এতে প্রবাসী আয় কমে যাবে। গ্রিসের অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব ইউরোপের অন্য দেশে পড়লে দেশের পোশাক রপ্তানির খাতও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গ্রিসে বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি জয়নুল আবেদীন জানিয়েছেন, বাংলাদেশিসহ সব বিদেশিই গ্রিসে আতঙ্কে আছেন। সামনের দিনগুলোতে কাজ ও ব্যবসা বাণিজ্য থাকবে কি না, তা নিয়ে ভয়ে আছেন তারা।

গত কয়েক বছরে গ্রিসের প্রায় দেড় লাখ ছোট-বড় কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটির আয়ের ১৬ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। কিন্তু তাও এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। এর পরও করের বোঝা বাড়ছেই। এদিকে সামনেই ঈদ। কিন্তু গ্রিসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এবারের ঈদ উপলক্ষে হয়তো টাকা পাঠাতে পারবেন না। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও পড়বে।

গ্রিসের সামনে দুটি উপায়। এক. শর্ত মেনে বিদেশি দাতাগোষ্ঠীর ঋণ নেওয়া। দুই. ইউরোজোন থেকে বের হয়ে গিয়ে অন্য উপায়ে অর্থের সংস্থান করা। রোববার বেইল-আউটের ঋণের প্রস্তাব গণভোটে গ্রিকরা প্রত্যাখ্যান করার পর নতুন করে এ নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি গ্রিক নেতারা। জনমত পক্ষে থাকায় গ্রিক নেতারা ইইউ নেতাদের সঙ্গে এবং বিদেশি দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে দর-কষাকষির সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু সেই সুযোগ দ্রুত কাজে না লাগাতে পারলে দুরবস্থার শেষ থাকবে না। এ অবস্থায় গ্রিসে থাকা বাংলাদেশিরা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন। প্রবাসীদের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে সাহায্য করতে পারে সরকার। তাদের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখাও সরকারের দায়িত্ব।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G