আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ট নগরবাসী (পর্ব-৩)
নিজস্ব প্রতিবেদক
বেসরকারীভাবে আবর্জনা অপসারনকারীদের সাথে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের মতবিরোধ চলছে। আর এই কারণে কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বর্জ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকায় এর ভাগাভাগি নিয়ে চাঁদাবাজি, সংঘর্ষ এবং গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আবর্জনা নিয়ে নোংরা রাজনীতি ও হানাহানির বিষয়টি স্বীকার করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা।
“যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দ্যাখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো মানিক-রতন”। আর এ কথাটির নিছক কথার কথা নয়। আর তার জ্বলন্ত প্রমাণ রাজধানীর এই আবর্জনা। ডুবুরীরা যেমন সিন্দু সেঁচে মুক্তা আনে, ঠিক তেমনি আবর্জনা হাতড়িয়ে বের করে আনা হয় মূল্যবান জিনিসপত্র, অকেজো জিনিসগুলোকেও দেয়া হয় নতুন রূপ।
বস্তাগুলোর মধ্যে কোনটিতে রয়েছে প্লাস্টিকের বোতল, ভাঙা লাইট, ব্যাটারী আবার কোনটিতে আছে কাগজ এবং লোহা-লক্করসহ গৃহস্থালির নানা উপকরণ। ভাঙারীর দোকানগুলোতে এই আবর্জনা বিক্রির মাধ্যমে প্রতিটি আবর্জনার ভ্যান দৈনিক ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় করে থাকে। আর এই আয়ের ভাগ পান বেসরকারীভাবে আবর্জনা সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক-শ্রমিক সবাই। যদিও এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেন এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
এছাড়া অঞ্চলভেদে বিভিন্ন বাসা থেকে মাসিক ৫০-১৫০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে বেসরকারীভাবে বর্জ্য সংগ্রকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্জ্য থেকে রমরমা ব্যবসার কারণে ভাগ নিয়ে রীতিমতো দলাদলি চলে, নির্বাচিত কাউন্সিলরদের ঘনিষ্ঠজন এবং স্থানীয় মাস্তানদের মধ্যে।তাই বেসরকারীভাবে এলাকাভিত্তিক আবর্জনা সংগ্রহকারীদের প্রতি মাসে দিতে হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা।
আর এই চাঁদা যাতে না দিতে হয় সে কারনে অঞ্চলভিত্তিক এসব ভ্যানচালকদের টোকেন দিয়েছে সিটি করপোরেশন। তারপরও প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত আছে বলে জানায় আবর্জনা সংগ্রহকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
সম্প্রতি বর্জ্যের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে কাউন্সিলরের সাথে দ্বন্দে বলি হতে হয়েছে মুগদা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ নেতা শফিকুল ইসলামকে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মতে, আবর্জনা নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের কোন্দলের বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। তবে উত্তর সিটি কর্পোরেশন বলছে, সমস্যা হলে তারা না-কী সমঝোতার চেষ্টা করেন।
আবজর্নার রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক মূল্য যাই থাকুক না কেন, দুর্গন্ধে নাক চেপে পথ চলা এসব সাধারণ মানুষ কেবল দুষণমুক্ত পরিবেশ-ই দেখতে চান।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ