আভিজাত্যে চামড়ার পণ্য
তাজিন আক্তার, প্রতিক্ষণ ডটকম:
ফ্যাশনে আভিজাত্য আনতে চামড়ার তৈরি পণ্যের বিকল্প নেই। ফ্যাশনে গাম্ভীর্যের পূর্ণরূপ দেয় পোশাকে চামড়ার ছোঁয়া। বর্তমান সময়ে চামড়ার তৈরি পণ্য আমরা ব্যবহার করছি ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে। কিন্তু ফ্যাশন পোর্টফোলিওতে এর আধিক্য যেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই চামড়া ফ্যাশনের পার্শ্ব বিষয় না হয়ে এখন ধরা দিয়েছে মূল ধারা হিসেবে।
তরুণদের পোশাকে চামড়া যুক্ত করছে আভিজাত্য। তবে পোশাকের অনুষঙ্গে এর ব্যবহার একটু বেশিই। জুতা, ব্যাগ, বেল্ট বা মানিব্যাগই বলি না কেন, সবার পছন্দ চামড়ার পণ্যই। এ ছাড়া এখন মিলছে চামড়ার সংমিশ্রণে ডিজাইনার কালেকশনের নানা গহনা। মেটালের গহনার পাশাপাশি এ গহনাগুলোও নজর কেড়েছে মেয়েদের।
এ ছাড়া পোশাকে ক্ল্যাসিক লুক আনতে কিছু প্রপসে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে চামড়া। সময়ের ধারাবাহিকতায় চামড়ার পণ্য হয়ে উঠছে পোশাকেরই অংশ। চামড়ার তৈরি পণ্যের কথা এলে প্রথমেই আসে ব্যাগের কথা। বর্তমানে সবার পছন্দের শীর্ষে রয়েছে লেদারের ব্যাগ। এই ব্যাগের ভিড়ে রয়েছে ছেলেদের অফিস ব্যাগ আর মেয়েদের সাইড ব্যাগসহ বিভিন্ন স্টাইলের ব্যাগ।
এ ছাড়া স্থান দখল করেছে পার্টি ব্যাগও। স্টাইলে ভিন্ন এসব ব্যাগের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। লেদারের ব্যাগ পোশাকের গাম্ভীর্য বাড়িয়ে তোলে। তিনি আরও বলেন, সময়ের ব্যবধানে লেদারের এসব ব্যাগে এসেছে রঙের ছোঁয়া। তাই আমাদের জন্য বেশ সহজ হচ্ছে পোশাকের সঙ্গে ব্যাগ মানিয়ে কেনা।প্রায় সব বড় মার্কেটে পাবেন চামড়ার ফ্যাশনেবল বাহারি পণ্য। তবে এসব পণ্যে ভিন্নতা এনেছে নানা রঙের ছোঁয়া।
তরুণদের চাহিদার বিষয় মাথায় রেখে লেদারের এসব পণ্যে ব্যবহার হচ্ছে রঙ। ব্যবহার হচ্ছে এ সময়ের রঙ। যেমন_ বেগুনি, লাল, হলুদ, কমলা, কালো, নীলসহ বাহারি রঙ, যা লেদার পণ্যগুলোকে দিচ্ছে ট্রেন্ডি লুক। এসব ব্যাগে ভিন্নতা আনতে চামড়ার ব্যবহারের পাশাপাশি করা হচ্ছে বহিরাবরণ পশম। বিশেষ করে পার্টি ব্যাগে মিলছে এমন ভিন্ন ছোঁয়া।
এর পর পরই স্থান মেলে জুতার। বিশেষ করে অফিস আউটফিটকে লক্ষ্য রেখে গুরুত্ব দেওয়া হয় জুতা। লেদারের এসব জুতায় খেয়াল রাখা হয় ফ্লিসিংয়ে। অবশ্য বর্তমান সময়ে সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে এর ডিজাইন। আকর্ষণীয় এবং ভিন্নতা আনতে জুতায়ও ব্যবহার হচ্ছে নানা প্রপর্স। এ ছাড়া মেয়েদের জন্যও আছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের শু। তবে এ ক্ষেত্রে বেশি খেয়াল রাখা হয় রঙের বিষয়টি।
কারণ মেয়েরা এ ব্যাপারে রঙকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মানিব্যাগ, বেল্ট, ব্রেসলেটসহ এখন মেয়েদের নানা গহনায় ব্যবহার হচ্ছে লেদার। পোশাকে স্থান পাচ্ছে লেদারের নানা ব্যবহার। লেদার ফ্যাশনে আরও নিত্যনতুন ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
লেদারের অফিস ব্যাগ পাবেন ১ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার, মেয়েদের ব্যাগ পাবেন ২ হাজার ২০০ থেকে ৮ হাজার, পার্টিব্যাগ পাবেন ৮০০ থেকে ২ হাজার ও ক্লজব্যাগ পাবেন ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এ ছাড়া জুতা মিলবে ২ হাজার থেকে ৭ হাজার এবং মেয়েদের শু পাবেন ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়।
এ ছাড়া ব্রেসলেট ৬০ থেকে শুরু করে ১৫০ টাকায় পাওয়া যায়। মেটাল মিশ্রণে চামড়ার চেইনের দাম পড়বে এক হাজার ৭৮০ টাকা। মেয়েদের গহনা রাখার বাক্স পাবেন ৪০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায়। ছেলেদের ফ্যাশন অনুষঙ্গের মধ্যে চামড়ার তৈরি বেল্ট ও মানিব্যাগ পাবেন ৩০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। আর মানিব্যাগ পাবেন ৪০০ থেকে এক হাজার টাকায়।
কোথায় পাবেন: দেশের বড় মার্কেটগুলোতে ভালো চামড়ার পণ্য পাবেন। তবে চামড়ার পণ্য না চিনলে ব্র্যান্ডশপগুলো থেকেই কেনা ভালো। নিউমার্কেট, গাউছিয়া, পলওয়েল, রাপা প্লাজায় পাবেন ভালোমানের লেদার ব্যাগ। এ ছাড়া ব্যাগ ও জুতা মিলবে বাটা, অ্যাপেক্সসহ অনেক ব্র্যান্ডশপে।
হাতিরপুলে মিলবে মানিব্যাগ, বেল্ট ও জুতার সম্ভার। যত্নআত্তি: চামড়ার তৈরি পণ্য ভালো রাখতে চাইলে যত্নের বিকল্প নেই। বিশেষ করে বর্ষাকালে। কারণ এ ধরনের পণ্য পানি লাগলে দ্রুত নষ্ট হয়। পানি লাগলেই তা হালকা রোদে শুকিয়ে নিন। তবে বেশি সময় রোদে যেন না থাকে। ভালো থাকবে মনে করে ব্যবহার না করে তুলে রাখা উচিত নয়। বরং এসব পণ্য ব্যবহারেই ভালো থাকে।
আলো-বাতাস নেই এমন জায়গায় রাখবেন না। এতে চামড়ায় ছত্রাক পড়ে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটানা ব্যবহার না করে কিছুদিন পর পর ব্যবহারে অনেক দিন ভালো থাকে।
তাজিন/প্রতিক্ষণ/এডি/আরেফিন