ক্রীড়া ডেস্ক
ইংলিশ হ্যারি কেন বাহিনী ফুটবল বিশ্বকাপ খেলতে কাতারে পৌঁছে গিয়েছেন। দলের কারও চোট আঘাত নেই। ছন্দ নিয়েও চিন্তা নেই। তবে খানিকটা উদ্বেগেই দিন কাটছে তাঁদের। কারণ, ইরানের জঙ্গিদের হুমকি। সে জন্য ইংল্যান্ড দলের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই নিরাপত্তায় রাতের ঘুম উড়েছে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের। বিশ্বকাপ খেলতে এসে ইংল্যান্ড যে হোটেলে রয়েছে, সেটি প্রায় মরুভূমি এলাকায়। খেলোয়াড়রা যাতে সম্পূর্ণ ভাবে ফুটবলে মন দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্যারেথ সাউথগেটের দলের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত ১৪ জন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ, চলতি বছরে ১০ জন ব্রিটিশ নাগরিককে অপহরণ বা হত্যা করার হুমকি দিয়েছে ইরানের উগ্রপন্থীরা। তাই অনুমতি ছাড়া ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের হোটেলের বাইরে পা রাখা মানা। এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল।
বিপত্তি ঘটেছে অন্য জায়গায়। ১৪ জন নিরাপত্তারক্ষী ২৪ ঘণ্টা টহল দিচ্ছেন ইংল্যান্ডের হোটেলের চার দিকে। উটের বিকট ডাকে বারোটা বেজেছে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের রাতের ঘুম। তবু নিরাপত্তার স্বার্থে এই অসুবিধা মেনে নিতে হচ্ছে কেনদের। মাঠের বাইরে ইরানকে এড়িয়ে চলার সব রকম চেষ্টা হলেও, মাঠে অবশ্য তাদের মুখোমুখি হতেই হবে ইংল্যান্ডকে। ২১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ ইরানের সঙ্গেই। খালিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচ দেখতে উপস্থিত থাকতে পারেন প্রায় ১০ হাজার ইংরেজ। তাই স্টেডিয়ামেও থাকছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, এর আগে ফুটবল মাঠে ইংল্যান্ড কখনও ইরানের মুখোমুখি হয়নি।
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের হোটেল চত্বরে উড়ে আসে একটি ইস্পাতের রিং। এই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। হোটেলের চার দিকে ১০ ফুট পাঁচিলের বাইরে প্রতি ৩০ গজ অন্তর মোতায়েন করা হয়েছে এক জন নিরাপত্তারক্ষীকে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর ইংল্যান্ডের হোটেলে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয় কাতারের পুলিশ। হোটেলের প্রতিটি প্রবেশ পথের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। একই কারণে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ২২ কিলোমিটার দূরে ইরান দলের হোটেলেও। আবাসিক ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার নেই। উগ্রপন্থীদের হুমকি নিয়ে কথা বলতে রাজি নন ইরানের ফুটবলাররা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ব্রাইটনে খেলেন ইরানের উইঙ্গার আলিরেজ়া জাহানবক্স। তিনি বলেছেন, ‘‘এখানে আমরা এসেছি নিজেদের কাজ করতে। সেটা হল ফুটবল খেলা। দলের সকলেই ফুটবল নিয়ে ভাবছে। ছোট থেকে স্বপ্ন দেখেছি জাতীয় দলের হয়ে খেলার। দলের সকলে কঠোর পরিশ্রম করছে। অনেক সমস্যা নিয়েই আমরা এই পর্যায় এসেছি।’’
কাতারের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিশেষ ভবনগুলোর নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হয় উটে সওয়ার বিশেষ প্রশিক্ষিত নিরাপত্তারক্ষীদের। কাতারের এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে খুবই জনপ্রিয় এই বাহিনী। রক্ষীদের ব্যবহার খুব নরম। কিন্তু প্রত্যেকেই অত্যন্ত দক্ষ।’’ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ এমআই ৫-এর প্রধান কেন ম্যাককালাম বলেছেন, ‘‘সম্পূ্র্ণ অনভিপ্রেত কার্যকলাপ’’। বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া ফুটবল সমর্থকদের ইরানে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি