ইউক্রেন মূল আসিয়ান শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে
আন্তর্জাতিকে ডেস্ক
ইউক্রেন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সাথে তার সম্পর্ক জোরদার করছে। এই সপ্তাহের শেষের দিকে কম্বোডিয়ার নম পেনে অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক সম্পর্ক চুক্তি স্বাক্ষর করবে ইউক্রেন৷
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা ব্যক্তিগতভাবে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অ্যামিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন (টিএসি) চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে এবং আসিয়ান ইভেন্টে যোগদান দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
টিএসি হল একটি শান্তি চুক্তি যা ১৯৭৬ সালে আসিয়ান-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। আসিয়ানে সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং চুক্তিভুক্ত দেশগুলির জাতীয় পরিচয়ের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধার মতো মৌলিক নীতিগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে৷
চুক্তিতে অ-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়ে সম্মত হওয়ার জন্য আসিয়ানের ১০টি সদস্য রাষ্ট্রের দ্বারা একটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ। কম্বোডিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভয়েজ অব আমেরিকা-কে বলেছেন, “টিএসি-তে আসিয়ান-এর জন্য কোনো ধরনের সহায়তা প্রদানের বাধ্যবাধকতা বহন করে না। চুক্তিটি বৈদেশিক সম্পর্ক বাস্তবায়নের আচরণবিধি, কাউকে কোনো সহায়তা প্রদানের চুক্তি নয়।”
২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত, রাশিয়া, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ শান্তি চুক্তিতে ৪৯ দেশের স্বাক্ষর রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত কিও 26 অক্টোবর সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ আয়োজিত একটি সেমিনারে ছিয়া বলেন, “আমি এটা বলতে পেরে খুশি যে আমরা [আসিয়ান] বৈঠকের সাইডলাইনে দুই সপ্তাহের মধ্যে নমপেনে টিএসি স্বাক্ষর করার জন্য [ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে] আমন্ত্রণ জানিয়েছি।”
কম্বোডিয়া এই বছরের আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিনিধিত্ব কররতে নমপেনে থাকবেন। মার্চ মাসে কম্বোডিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেছিল।
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আসিয়ান-সমর্থিত আহ্বানের আবেদন করা করেছিল। আঞ্চলিক সংবাদ গুলি গত সপ্তাহে রিপোর্ট করেছে, কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ান-ইউক্রেনীয় আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু কোন পক্ষই সংলাপে অংশ নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেনি।
এশিয়া বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ক্রিটেনব্রিঙ্ক বলেছেন, “পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে ইউক্রেনের উপস্থিতি আসিয়ানের সংঘাতের সমাধান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে শান্তিরক্ষা নেতৃত্বের পাশাপাশি সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি আসিয়ানের দীর্ঘস্থায়ী সমর্থন প্রদর্শন করবে।”
কম্বোডিয়া এবং ইউক্রেন ১ নভেম্বর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাং সেন এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি ফোন কলের পর একটি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছিল। দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করবে।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনও জাপানের সহযোগিতায় রাশিয়ান বাহিনীর আক্রমণের সময় ইউক্রেনে লাগানো স্থল মাইন অপসারণে সহায়তা করার জন্য ডিমাইনিং দল পাঠাতে সম্মত হন। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে আসিয়ানের কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেই। সিঙ্গাপুর ব্যতীত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর প্রাথমিক মাসগুলিতে আসিয়ান মূলত নিঃশব্দ ছিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার সময় রাশিয়ার অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল আসিয়ান সদস্যরা পুতিনের সরাসরি নিন্দা করা থেকে বিরত রয়েছে।
তিন আসিয়ান সদস্য (ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং লাওস) রাশিয়ার ইউক্রেনের অতিরিক্ত অঞ্চল সংযুক্ত করার প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়ে অক্টোবরের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোট থেকে বিরত ছিল।
সূত্র : ভয়েজ অব আমেরিকা