ইতিহাসে সবচাইতে আলোচিত “ভিলেন”!

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৩৪ অপরাহ্ণ

ভিলেনইতিহাস বড় নির্মম। ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করে না কিংবা ছাড় দেয় না। পৃথিবীর ইতিহাসে যেমন ‘হিরো’ রয়েছে তেমনি রয়েছে ‘ভিলেন’। প্রতিক্ষণের পাঠকদের জন্য ইতিহাস নন্দিত এমন পাঁচ “ভিলেনের” কথা।

অ্যাডলফ হিটলারভিলেন

ঠিক কি কারণে হিটলার ইহুদী-বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন তার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় না। অনেকে ধারণা করেন তার মা মারা যাবার কারণে তার ইহুদী চিকিৎসকের প্রতি ক্ষোভ থেকেই তিনি পরবর্তী জীবনে ইহুদী নির্মূলে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠেন। জীবনের শুরু দিকে বেশ কিছুটা সময় তিনি ভিয়েনায় কাটান। সেখানে রাস্তায় রাস্তায় নিজের আঁকা পোস্টকার্ড বিক্রি করে জিবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ভিয়েনা এমন এক শহর ছিলো যেখানে ইহুদী-বিদ্বেষ ছিলো চরমে, সেটাও তাকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে।

কমপক্ষে ১১ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যুর কারণ হন তিনি। এদের বেশির ভাগই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে গ্যাস চেম্বারে, বিভিন্ন অমানবিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাঝে পড়ে, ব্রাশফায়ারের সামনে, অথবা দাস হিসেবে না খেয়ে ও রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।

নেপোলিয়ন বোনাপার্টভিলেন

সাড়া পৃথিবীতে যুদ্ধ এবং সামরিক শক্তির প্রতীক হয়ে ওঠেন নেপোলিয়ন। সে সময়ের তুলনায় একটু খাটো উচ্চতার ছিলেন তিনি এবং ধারণা করা হয়, এই উচ্চতার জন্য তিনি হীনমন্যতায় ভুগতেন এবং নিজের চাইতে বেশি উচ্চতার মানুষ পছন্দ করতেন না তিনি। একটি ইংরেজি শিশুতোষ ছড়ায় তাকে “বুগিম্যান” বলে আখ্যা দেওয়া হয় এবং বলা হয়, তিনি রাতের বেলায় বাচ্চাদের ধরে খেয়ে ফেলতেন। কী কারণে তাকে এত অপছন্দ করতো মানুষ? অনেকেই তাকে ক্ষমতাবান এবং চৌকশ সেনাপ্রধান হিসেবে দেখেন। তবে ফরাসী বিপ্লবের হাল ধরলেও পরবর্তীতে ক্ষমতার লোভে এর মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে যান তিনি। ফরাসীদের অনেকগুলো যুদ্ধের মাঝে ফেলা ছাড়াও সাধারণ মানুষের বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নেন তিনি। তাই অনেকে তার প্রশংসা করে থাকলেও আসলে তাকে “ভিলেন” না বলার কোনও উপায় নেই।

জ্যাক দ্যা রিপারভিলেন

সম্ভবত ইতিহাসের সবচাইতে বিখ্যাত খুনি জ্যাক দ্যা রিপার। তার আসল নাম আজো অজানা। লন্ডন নিউজপেপার ১৮৮৮ সালে ভয়ংকর এই খুনির নাম দেয় জ্যাক দ্যা রিপার। এখনও পর্যন্ত এতই বিখ্যাত জ্যাক দ্যা রিপার, যে পৃথিবীর প্রথম “রিয়েলিটি স্টার” বলে ডাকা হয় তাকে। ১৮৮৮ সালের হেমন্তে ১০ অন্ধকার, মেঘে ঢাকা সপ্তাহ জুড়ে ৫ যৌনকর্মীর ভয়াবহ খুন এবং তাদের শরীর বিকৃত করে ফেলার জন্য দায়ী ছিলো সে। সে সময়ে খুনের ঘটনা অস্বাভাবিক ছিলো না বটে, কিন্তু এসব কারণবিহীন বীভৎস এবং একই প্যাটার্নের খুন সবাইকে ধাঁধায় ফেলে দেয়।
রাসপুতিনভিলেন

রাশিয়ার জারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত এই ব্যক্তির নামে কানাঘুষা প্রচলিত আছে, যে ব্ল্যাক ম্যাজিক নিয়ে তিনি পড়াশোনা করতেন। এমনকি জারের স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক ছিলো বলে জানা যায়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি পরিমাণে বিষ খেয়ে বিষের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি। তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে ৭ জন মানুষকে মেরে ফেলতে পারে এমন পরিমাণে বিষ মেশান রাশিয়ান অভিজাত ব্যক্তিবর্গ। এর পরেও তিনি বেঁচে ওঠেন এবং তাকে মৃত ভেবে কাছে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তিকে মারতে চেষ্টা করেন। গুলি করা হয় তাকে উদ্দেশ্য করে কিন্তু তার পরেও তিনি পালিয়ে যান। পালাতে গিয়ে বরফ জমাট হ্রদের বরফ ভেঙে পানিতে পড়ে যান তিনি। পরে আবিষ্কার করা হয়, পানিতে ডুবে নয়, বরং প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু হয় তার।

ব্লাডি মেরিভিলেন

ইংল্যান্ডের রানী প্রথম মেরিকে সব সময়েই খল চরিত্র হিসেবে দেখা হতো। ধর্মের প্রতি অতিরিক্ত নিবেদিত থাকার কারণে ক্যাথোলিক ধর্ম গ্রহনে অনিচ্ছুক ৩০০ মানুষকে পুড়িয়ে মারেন তিনি। তার ধারণা ছিল এসব মানুষকে পুড়িয়ে মারার মাধ্যমে পরকালে তিনি পুরস্কৃত হবেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G