ইলিশ ধরা বন্ধ, বিপাকে ভোলার জেলেরা

প্রকাশঃ মার্চ ১২, ২০১৭ সময়ঃ ১:৩৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৩৩ অপরাহ্ণ

কামরুজ্জমান শাহীন, ভোলা প্রতিনিধি :

দাদনের জালে জর্জরিত ভোলার জেলেরা।তারা মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আবার কেউ দাদনের টাকা পরিশোধ করতে কাজের সন্ধানে এলাকা ছাড়ছেন। চলতি মাসের ১ তারিখ মেঘনাসহ উপকূলের কয়েকটি নদীতে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এতে করে জেলেরা পড়েছেন মহাবিপদে।

এদিকে বিশেষ সময়ে নদীতে মাছধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও জেলেদের জন্য পুনর্বাসন সহায়তা একেবারেই কম। প্রতিবছর এই সহায়তা দেয়া হলেও সব জেলের কাছে তা পৌঁছায় না। সহায়তা বিতরণে দলীয়করণের অভিযোগও রয়েছে। ভোলার উপকূলীয় নদীতে ইলিশ ধরা, মজুত, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ছড়িয়ে পড়ে উপকূলের গ্রাম থেকে গ্রামে। মৎস্যজীবীদের জন্য আগাম সতর্কতা।

ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, নির্দেশ অমান্যকারীর শাস্তির কথা। আর এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে মার্চ থেকে দুই মাস উপকূলীয় এলাকার গ্রামগুলোতে কোনো কাজ নেই। শুধু জেলে নয়, মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী, শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, এমনকি ক্ষুদ্র চা-পান দোকানিদের জীবনেও স্থবিরতা নেমে এসেছে। কমে গেছে নিত্যদিনের আয়-রোজগার। চড়া সুদে ধারদেনা আর সঞ্চয় ভেঙে দিন চলছে উপকূলের প্রান্তিক জনপদের মানুষের। মেঘনাসহ উপকূলের কয়েকটি নদীতে মাছধরা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। জেলেরা এই নিষেধাজ্ঞাকে বলে ’অবরোধ’।

রাজপথের অবরোধ জেলেদের প্রভাবিত না করলেও নদীতে জলের অবরোধ তাদের জীবন ছুঁয়ে যায়। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে দু’মাস। মাছধরা পেশায় নিয়োজিত বহু মানুষের জীবনে নেমে এসেছে সংকট। শুধু ভোলা থেকেই অন্তত লক্ষাধিক মানুষ কাজের সন্ধানে বাইরে চলে গেছেন। চর কুকরির মনুরারঠোস মাছঘাটের কাছে চায়ের দোকানে আলাপ হয় মো. সেলিম মাঝির সঙ্গে। মাছধরা বন্ধ থাকায় তিন সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। এ সময়ে মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদ নিয়েছেন প্রায় দশ হাজার টাকা। চর কলমির বকসি মাছ ঘাটের জেলে মো: বেল্লাল জানান, ৪-৫ মাস ধরে কাজ নেই। ঘরের ৬ সদস্যের মুখে ভাত তুলে দেয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। কর্মহীন এই সময়ে মহাজন আর এনজিওর কাছে দেনা করেছেন প্রায় ২০ হাজার টাকা। বেতুয়া ঘাটের শ্রমিক মো. আলমগীর। বাড়ি পাশের গ্রাম আছলামপুর ইউনিয়নে। নদীতে মাছধরা বন্ধ থাকায় তার জীবিকায় নেমে এসেছে সংকট। ঘাটে কাজ করে দৈনিক যা পেতেন, তা দিয়ে চলে যেত সংসার। এখন সে অবস্থা আর নেই। ভরা মৌসুমে যেখানে রোজগার হয় ৩-৪শ টাকা, সেখানে এখন দিনে সর্বোচ্চ মেলে ৫০ টাকা। সংসার চালিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G