ঈদ সামনে রেখে জাল টাকা চক্র সক্রিয়

প্রকাশঃ জুন ২৮, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৪৯ অপরাহ্ণ

ফাহিম মোনায়েম, প্রতিক্ষণ :

সামনে ঈদ রেখে জাল টাকা ছড়িয়ে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সারা দেশে। বছর জুড়েই তাদের এ কার্যক্রম কমবেশি চালু থাকলেও  ঈদ এলেই তা যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে এ চক্রটিjal taka। তাদের প্রধান টার্গেট থাকে বছরের দুটি ঈদ । আর এই টার্গেট নিয়েই তারা ছাপাতে থাকে কোটি টাকার জাল নোট। আর সময়-সুযোগমতো চক্রের সদস্যরা তা বাজারে ছেড়ে দেয় ।

 গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশেই জাল টাকা বাজারজাতকারী চক্রের সদস্য রয়েছে। আর গোয়েন্দা পুলিশের ডাটাবেজ অনুযায়ী রাজধানীতে এই গ্রুপের সংখ্যা ১৫টির মতো। এরা গ্রামের সাধারণ মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে খুব সহজেই জাল টাকা চালিয়ে দেওয়া যায় বলেই তারা গ্রামকে টার্গেট করে থাকে বলে গোয়েন্দা সূত্রটি জানায়।

 গোয়েন্দা তথ্যমতে, প্রতিটি জেলায় জাল টাকা চক্রের কমপক্ষে একজন সদস্য থাকে। সে টাকা নিয়ে ওই এলাকায় তার অন্য সদস্যদের মাঝে বিতরণ করে। এরপর ওই টাকাগুলো খুচরা বাজারে ছেড়ে দেয় অন্যরা। এতে করে ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, জাল টাকা তৈরির প্রতিটি চক্রে যুক্ত ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য। কাজের সুবিধার্থেই এরা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। প্রতিটি গ্রুপের কাজও আবার ভাগ করা থাকে।

 এদের ধরতে এই সময়টাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতাও বেড়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আইনি দুর্বলতার কারণে খুব বেশি দিন এদের আটকে রাখা যায় না। আইনের ফাঁক গলিয়ে এরা সহজেই বেরিয়ে এসে আবারও যুক্ত হয় এ পেশায়।

গত ৮ জুন রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের আদর্শ রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোটসহ এ চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি পশ্চিমের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম এ প্রসঙ্গে জানান, মূলত ঈদ, পূজা ও বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে তারা এই ব্যবসা করে থাকে। সে অনুযায়ী রমজান মাসকে সামনে রেখে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল এ চক্র। তবে গোয়েন্দা নজরদারির কারণে তাদের সে মিশন ভেস্তে যায়।

 গত ১৩ জুন রাত ৮টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পশ্চিম কাফরুলের তালতলা এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরি চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অপর একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছাপানো ও আধা ছাপানো অবস্থায় বাংলাদেশি টাকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, গোয়েন্দা ডাটাবেজ অনুযায়ী রাজধানীতে ১৫টি জাল টাকা তৈরির চক্র সক্রিয় রয়েছে। প্রতিটি জেলায় এদের অন্তত একজন করে এজেন্ট থাকে। সদস্যদের মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার জন্য প্রতিটি এজেন্টকে ১০ লাখ করে জাল টাকা দেওয়া হয়।

তিনি এও বলেন, জাল টাকার চক্রগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা কাজ করছে বা করার চেষ্টা করছে তাদের প্রত্যেককে ধরার চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।

২৭ জুন বনশ্রী এলাকা থেকে ১ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের জাল নোটসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র‌্যাব। আটককৃতদের মধ্যে এ চক্রের মূল হোতাও রয়েছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির মূল হোতা রহিম শেখসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের জাল নোট উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G